সাগরে ভারতের সীমানায় অনুপ্রবেশের দায়ে আটক কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার ৪৩ জেলে পরিবারে চলছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। পরিবারে আয়ের একমাত্র উপার্জনক্ষম জেলেরা ভারতের কারাগারে আটক থাকায় অনিশ্চয়তা ভর করেছে তাদের মাথায়। জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর উপজেলার কৈয়ারবিল নজর আলী মাতবর পাড়ার নজরুল কোম্পানির ফিশিংবোট গভীর সমুদ্রে ভারতীয় সীমায় প্রবেশের অজুহাতে ২৮ জন মাঝি-মাল্লাসহ ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে আটক হয়। এছাড়া গত ১ ডিসেম্বর আলী আকবর ডেইলের এফবি আল্লাহমালিক ফিশিং বোটের মালিক আব্দুল আলীম-পুত্রসহ ১৫ জন মাঝি-মাল্লা আটক হয়। এছাড়া বাঁশখালী ও মহেশখালীর দুটি বোটের আরো ১৩ জন জেলে আটক হয়।
জেলে সম্রাজের স্ত্রী সুখপতি দাস বলেন, তার স্বামী সাগরে আটক হয়ে ভারতের কারাগারে থাকায় সংসারে খাদ্যসংকট চলছে। দুই সন্তান নিয়ে কষ্টে আছি। বৃদ্ধ ও অসুস্থ শ্বশুরও কোনো কাজ করতে পারেন না। আশায় আছি দ্রুত ছাড়া পেলে সংসারে ফের হাল ধরতে পারবে। পাশের বাড়ির আরেক আটক জেলে সর্বোনন্দের স্ত্রীও জানান একই কথা। ছোট ছোট চারটি সন্তান নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। ২০ নভেম্বর আটক অপর বোটের মৎস্য শ্রমিক কিরণপাড়ার জহির আলম ও তার পুত্র তুহিনের পরিবারে চলছে আহাজারি। পিতা-পুত্র বাড়ি না থাকায় বাজার, কেনাকাটা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে।
এফবি আল্লাহমালিক ফিশিং বোটের মালিক আব্দুল আলীমের ভাতিজা জিয়াউর রহমান জানান, তার চাচার ফিশিং বোট সুন্দরবনের রাঙাবালী এলাকায় থাকা অবস্থায় ইঞ্জিন বিকল হলে ভেসে ভারতীয় সীমানায় গেলে কোস্ট গার্ড ১৫ মাঝি-মাল্লাসহ বোট নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহায়তায় তারা আটক জেলেদের দ্রুত মুক্তির লক্ষ্যে যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেছেন। দুই-এক দিনের মধ্যে ঢাকায় যাবেন।
অপর ফিশিং বোটের মালিক নজরুল ইসলাম জানান, আটক ২৮ জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছানো হয়েছে। তবে অজ্ঞাত কারণে এগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। ১৫ দিন পরেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র না পৌঁছায় প্রতিটি জেলে পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা সব জেলেদের আশু মুক্তির লক্ষ্যে সরকারের সহযোগিতা চান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্যথোয়াই প্রু মারমা বলেন, উপজেলার দুটি ফিশিং বোটের ৪৩ জন জেলের মুক্তির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসককে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জেলেদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দ্রুত তৈরি করেও দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই জেলেরা দেশে ফিরতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।