গাজীপুরের টঙ্গীতে অভাবের তাড়নায় সদ্য প্রসূত এক শিশুকে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মা-বাবার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার টঙ্গীতে সকালে এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে মরকুন এলাকায়। এঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে। ওই পিতা-মাতার বিচার চেয়েছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে মনিরা নামক এক নারীর জিম্মায় রেখেছেন।
খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ ও থানা সমাজসেবা শিশু সুরক্ষা কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে মরকুন মধ্যপাড়া ময়লার স্তুপে শিশুটিতে জীবিত অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় এলাকাবাসী। পরে ওই এলাকার নি:সন্তান মনিরার জিম্মায় শিশুটিকে রাখা হয়। একপর্য়ায়ে শুক্রবার ওই শিশুটির বাবা-মার সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে পারে পুলিশ।
পুলিশ আরো জানায়, ওই ছেলে শিশুটির বাবা স্বপন মিয়া (৪২) দীর্ঘদিন যাবৎ দু’টি কিডনি নষ্টজনিত রোগে এবং মা মাটিকাটা শ্রমিক খালেদা (৩০) প্রসবজনিত কারণ ছাড়াও নানা ধরনের রোগে ভুগছেন। এছাড়া তাদের সংসারে জিহাদ (১২) ও ফাতেমা নামে আড়াই বছরের দু’জন ছেলে মেয়ে রয়েছে। রংমিস্ত্রী স্বপন তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে নি:স্ব হওয়া ও আয় রোজগার না থাকায় তারা এ অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
শিশুটির মা খালেদা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অকপটে স্বীকার করলেন, স্বামী অসুস্থ, ১৫ হাজার টাকা বাড়িভাড়া জমে গেছে, টাকার জন্য বাড়িওয়ালার চাপ, স্বামীর রোজগার নেই। সংসারে আরো দু’জন ছেলে মেয়ে রয়েছে। অভাবের তাড়নায় ছেলেকে ফেলে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে টঙ্গী সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মী জান্নাতুল বাকিয়া বলেন, শিশু দত্তক দেয়া বা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে অভিভাবকত্ব (গার্ডিয়ানশীপ) দেয়া যায়। ওই দম্পতি জীবিত শিশুটিকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে অমানবিক কাজ করেছেন।
এ ব্যাপারে টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তর দেখছে। থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।