জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ছাত্রশিবির সমর্থিত ২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। রিয়াজুল ইসলাম ও আব্দুল আলিম আরিফের নেতৃত্বে ঘোষিত এ প্যানেলে রয়েছেন চার নারী শিক্ষার্থী। প্যানেল ঘোষণা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারী প্রার্থীরা হলেনÑবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুখীমন খাতুন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া এবং নির্বাহী সদস্য পদে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্তা আক্তার ও লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার অওরীন।
সুখীমন খাতুন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার জবি শাখার সভানেত্রী। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রীহলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সদস্য পদে নির্বাচন করা শান্তা আক্তার ইনকিলাব মঞ্চ জবি শাখার সদস্য সচিব। সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন তিনি। এছাড়া নওশীন নাওয়ার জয়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আন্দোলনের পরিচিত মুখ। নওশীন নাওয়ার জয়া জবি সংস্কার আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে পুরান ঢাকার হল উদ্ধার এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচন করার বিষয়ে সুখীমন খাতুন বলেন, বৃহৎ পরিসরে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ পেতেই আমি ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করছি।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়াই করা নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, জবির সীমাবদ্ধতা ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মৌলিক সুবিধার বঞ্চনা আমাকে সব সময় পীড়া দিয়েছে। ১৮–১৯ সেশন থেকে ছাত্রীহল নির্মাণ ও ক্যাফেটেরিয়া সংস্কারসহ যৌক্তিক দাবিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছি।
শিবিরের প্যানেলে আসা সম্পর্কে জয়া বলেন, শিবির শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অপরাজনীতি না করা, সুশৃঙ্খলতা ও টিমওয়ার্কের ওপর গুরুত্ব দেওয়ায় ছাত্রশিবিরকে অন্যদের তুলনায় বেশি দায়িত্বশীল মনে হয়েছে। এসব কারণেই আমি এ প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শিবিরের প্যানেলে আসা নিয়ে শান্তা আক্তার বলেন, মনে হয়েছে ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে যদি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারি, তাহলে আমি স্বাতন্ত্র্যতা বজায় রেখে কাজ করতে পারব। আমার মনে হয়েছে, ছাত্রশিবির নারী শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে। নির্বাচিত হলে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা হবে আমার মূল লক্ষ্য।
এছাড়াও ফাতেমা আক্তার অওরীন বলেন, সব প্যানেলেরই স্বকীয় আইডিওলজি রয়েছে, গঠনতন্ত্র রয়েছে। আমার ব্যক্তিগত মোটিভ তথা, চিন্তাভাবনা আর ছাত্রশিবিরের মোটিভ আমার কাছে একই মনে হয়েছে। তাই এ প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।
জকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য গত ১৮ নভেম্বর ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করে ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রশিবিরের প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাসুদ রানা।