অসময়ের বৃষ্টিতে যেসব এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

আমার দেশ ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩২

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আবাদি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষকরা আবাদি ধান নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দুদিন ধরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ও হালকা বাতাসে জমিতে রোপা আমন ধানের গাছ হেলে পড়ে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। মধ্য কার্তিকের এই বিরূপ আবহাওয়ায় আধা-পাকা ধান নিয়ে উপজেলার কৃষকদের মাঝে দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাতাসের কারণে অনেক জমিতে ক্ষেতের ধান হেলে গিয়ে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে বিরূপ এ আবহাওয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার মোট ৩১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫০ হেক্টর জমিতে আগাম ধানের চাষ হয়েছিল এবং কিছুদিন আগে কৃষকরা তাদের আবাদকৃত আগাম ধান কেটে মাড়াই কাজ সম্পন্ন করেছেন। এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মেহেদী হাসান আমার দেশকে জানান, ‘দুদিন ধরে বয়ে যাওয়া বাতাস ও বৃষ্টিতে আমন ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা অপেক্ষাকৃত উঁচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমিতে বেশিক্ষণ আটকে থাকবে না।’

বিজ্ঞাপন

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, গত কয়েক দিনের নিম্নচাপের প্রভাবে হালকা বৃষ্টি ও অতিরিক্ত বাতাসের কারণে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের রোপা আমন ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ার ফলে উপজেলার কৃষকদের দুই হেক্টর জমির রোপা আমন ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত দুই দিনে বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে আমাদের আমন ধান রঞ্জিত, ধানিগোল, গুটিস্বর্ণা, মামুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধানগাছ মাটিতে শুয়ে গেছে এবং নিম্নচাপ এলাকায় ধান পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান আমার দেশকে বলেন, ‘এই উপজেলায় ২০ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে হালকা বৃষ্টি ও বাতাস হওয়ায় উপজেলার প্রায় দুই হেক্টর জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে। যদি আবার বৃষ্টি ও বাতাস হয়, সে ক্ষেত্রে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় চলতি মৌসুমের আমন ধান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফসল পাকার আগ মুহূর্তে ক্ষেতজুড়ে ধানগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়ায় সম্ভাব্য ফলনহানির শঙ্কায় দিশাহারা কৃষকরা। ১ নভেম্বর দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, পাকার অপেক্ষায় থাকা সোনালি ধানগাছগুলো বৃষ্টিতে নুয়ে পড়ে রয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান শুয়ে পড়ায় ফলন ও মান উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্ষতি কমাতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার আমার দেশকে জানান, ‘টানা বৃষ্টিতে বেশ কিছু জমির ধান হেলে পড়েছে। তিন দিন ধরে আমাদের পুরো টিম মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।’

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানান, গত দুদিনে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির কারণে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠের রোপা ধানের গাছ হেলে পড়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, যেসব ধানের শিষ বের হয়নি ও দানা নরম, সেই ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ফলে এবার লোকসানের বোঝা নিতে হবে কৃষকদের। বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ ফলন হওয়ার কথা থাকলেও হেলে পড়ায় পাঁচ-ছয় মণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাফেজ মো. জুনায়িদ হাসান বলেন, ধানের গোড়া পচা ও মাজরা পোকার আক্রমণ কমেছে। ফলে অনেকেই স্বস্তিতে ছিলেন। কিন্তু ধান পড়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। উপজেলার আলাইপুর, সিংদহ, কমলাপুর, শ্রীরামপুর, গান্না, কমলাপুর গ্রামের মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকদের ধানক্ষেত পড়ে রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, ‘এ বছর উপজেলায় আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ১৮ হাজার ৭৩৪ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

রূপালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের সভা

সিডনিতে এক উচ্চাভিলাষী মসজিদের স্বপ্ন এখন বাস্তবতার কাছাকাছি

যমুনা ব্যাংক ও ইউনাইটেড হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের চুক্তি

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আইআইইউসি প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ

খুলনায় বিএনপি অফিসে হামলা-গুলি, স্কুল শিক্ষক নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত