বিদেশে উচ্চশিক্ষায় জবির উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র

প্রতিনিধি, জবি
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৪: ২৫

একজন এক বছরে ১২টি গবেষণা প্রকাশনায় নিজের নাম তুলেছেন, আরেকজন ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার মতো নামকরা প্রতিষ্ঠানে পিএইচডির গন্তব্য ঠিক করেছেন। দুজনেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (১২তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তারা হলেন প্রতীতি সাহা ও রেজয়ানা আমিন শীতল।

এই দুই তরুণীর গল্প শুধু উচ্চশিক্ষায় সাফল্য নয়, বরং স্বপ্নকে লালন করে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাস্তব করে তোলার এক অনন্য উদাহরণ।

প্রতীতি সাহা অনার্সে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই গবেষণার প্রতি গভীর আগ্রহ দেখিয়েছেন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই তিনি পাঁচটি রিসার্চ পেপার, একাধিক রিভিউ আর্টিকেল এবং একটি বইয়ের অধ্যায়সহ মোট ১২টি গবেষণা প্রকাশ করেন।

এই অসাধারণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের আটটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পূর্ণ স্কলারশিপে পিএইচডির অফার পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো— ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা টুইন সিটিজ, রাইস ইউনিভার্সিটি, টেক্সাস এ এন্ড এম, জর্জিয়া ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি, আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিল, ক্লেমসন ইউনিভার্সিটি ও মিজৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

প্রতীতি সাহা অনার্স শেষ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং এমএসসি করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রোফেশনালস (বিইউপি) থেকে, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। পাশাপাশি তিনি জবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. জে. সালেহ আহমেদের অধীনে ইলেকট্রোকেমিস্ট্রি ল্যাবে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন।

প্রতীতি বলেন, “অনার্সে ভালো সিজিপিএ অনেক বড় শক্তি। টিকমতো পরিশ্রম করে সুপারভাইজারের সঠিক গাইডলাইনে কাজ করলে স্কলারশিপ পাওয়া কঠিন কিছু নয়।”

রেজয়ানা আমিন শীতলও একই ব্যাচের আরেক মেধাবী মুখ। শুরু থেকেই ছিলেন অধ্যবসায়ী। গবেষণার পাশাপাশি সময়মতো গুছিয়ে ফেলেছেন নিজের সিভি ও স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP)। ফলাফল—যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন পূর্ণ স্কলারশিপ।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো—ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া, আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা লিঙ্কন, মিশোরী সাইন্স এন্ড টেকনোলজি এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন মিসিসিপি। তার চূড়ান্ত গন্তব্য হিসেবে শীতল বেছে নিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া।

তিনি অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এবং গবেষণা করেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ আহমেদের তত্ত্বাবধানে। তাঁর এখন পর্যন্ত দুইটি গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

শীতল বলেন, “সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত যেন সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করা যায়। ভালো রিসার্চ ওয়ার্ক করা বাধ্যতামূলক। নিজের জন্য ভালো সিভি ও এসওপি প্রস্তুত রাখতে হবে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে, কারণ ওনারাই রিকমেন্ডেশন লেটার দেবেন।”

তাদের এই অর্জন কেবল ব্যক্তিগত নয়—এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের রসায়ন গবেষণা ক্ষেত্র এবং বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণের অগ্রগতির প্রতীক।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত