প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে শিল-পাটা

সবুর শাহ্ লোটাস, বগুড়া
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭: ৫২

কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী শিল আর পাটা। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিকল্প হিসেবে এসেছে ব্লেন্ডার মেশিন। এদিকে প্যাকেটজাত গুঁড়া মসলাও সর্বত্র পাওয়া যায় তা দিয়েও চলে রান্না।

তবে পাটায় পেষা মসলার রান্না করা খাবারের স্বাদ বেশি হয় বললেন শিবগঞ্জের রায়নগর কৃষ্ণপুর গ্রামের গৃহিণী তাহেরা জামান লিপি। বাজারের গুঁড়া মসলার তরকারি এত মজা হয় না। এখনও শিল-পাটায় পিষেই রান্নার মসলা তৈরি করেন তিনি। একটু কষ্টসাধ্য হলেও আমার গ্রামের অনেকেই শিল-পাটার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

বিলুপ্ত প্রায় এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে বগুড়ার শিবগঞ্জে এখনো তৈরি হচ্ছে শিল-পাটা। মহাস্থান এলাকার করতোয়া সেতু সংলগ্ন বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের পাশে ক্ষুদ্র পরিসরে শিল-পাটার ব্যবসা করছেন রুবেল আহম্মেদ।

তার ‘নোমান এন্টারপ্রাইজ’ নামক ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানে কয়েকজন কারিগর দিয়ে তিনি শিল-পাটা তৈরি করছেন। রুবেল জানান, শিল-পাটা তৈরির জন্য সাতক্ষীরা ও হিলি থেকে শিল পাথর কিনে আনা হয়। তার তৈরি শিল-পাটা বিভিন্ন জেলা উপজেলায় পাঠানো হয়। এ ছাড়া কয়েকজন কারিগর এখানে কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।

প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঠান্ডা মিয়া জানান, চারকোনা পাথরগুলোকে খোদাই করে গোলাকার করা হয়। পরে পাথরের ওপরের অংশে খুঁটে খুঁটে খোদাই করা হয়। বিভিন্ন নকশাও করা হয়। পরে হলুদ মেখে পাথরটিতে উজ্জ্বল রং দেওয়া হয়। এতে পাথরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।

বড় আকারের একেকটি শিল-পাটা আকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খরচ পরে। সেগুলো পাইকারি দরে বিক্রি হয় ৩৭০ থেকে ৩৭৫ টাকায়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে শিল-পাটা কিনে নিয়ে যায়। নকশা কারিগর জাহাঙ্গীর জানান, একটা পাটা নকশার জন্য ২৫ টাকা মজুরি পান। দিনে ৩৫-৪০টি পাটা খোদাই করে নকশা করেন। শিল-পাটার চাহিদা এখনও হারিয়ে যায়নি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত