জেলে থেকেও গায়েবি স্বাক্ষরে ওঠাচ্ছে বেতন ভাতা!

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ১৬
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ০০

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গায়েবি স্বাক্ষরে বেতন ভাতা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষক ও এক কর্মচারির বিরুদ্ধে। তারা দুজন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা-মামলার আসামি।

অভিযুক্তরা হলেন মাটিয়ামালী পাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মুঞ্জুরুল হক। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অন্যজন একই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও নওগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রবিউল করিম।

গত ২ ডিসেম্বর ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় এখন জেল হাজতে আছেন তারা দুইজন। অথচ ডিসেম্বর ৯ তারিখে তাদের কর্মস্থল মাটিয়ামালী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বেতন ভাতার কাগজে গায়েবি স্বাক্ষর করছেন!

Tarash Fake Signature

তাদের দুইজনের জাল স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই প্রধান শিক্ষকসহ ওই দুজন শিক্ষক পলাতক ছিলেন। প্রধান শিক্ষকের নামে কোনো মামলা না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। তিনি নওগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক। এ কারণে দলীয় দুই নেতাকে চাকরি বিধি না মেনে জেলে থাকা অবস্থায়ও তাদের বেতন ভাতার কাগজে নিজেই ‘জাল স্বাক্ষর’ করে সহযোগিতা করছেন।

আরও জানা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীর হাজিরা খাতায় জেলে যাওয়ার পর থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো.মুঞ্জুরুল হক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. রবিউল করিমের উপস্থিতির ঘরে কোনো স্বাক্ষর না থাকলেও গায়েবি ভাবে গত নভেম্বর মাসের বেতন ভাতার কাগজে স্বাক্ষর দেখাচ্ছেন।

এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক কোনো নিয়ম না মেনে নিজের পছন্দ মতো বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা নিয়ে তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম গোলাম রেজার সাথে বিরোধ জড়ান। এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসলে তিনিসহ আওয়ামী লীগ দলীয় লোকজন নিয়ে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিদ্যালয়ের ভিতরেই মারধর করে আটকে রাখেন। পরে খবর পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষা কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও লাঞ্ছিত করেন। যা নিয়ে তাড়াশ থানায় একটি মামলা হয়। সে মামলায় থানা পুলিশ তদন্তের পর আসামি প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনসহ সকল আসামির বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।

যোগাযোগ করলে মাটিয়ামালী পাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এম রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই। বিদ্যালয়ে আসেন। আসলে সাক্ষাতে কথা বলবো।

এ দিকে জেলে থেকেও বেতন ভাতার কাগজে স্বাক্ষর করার অনৈতিক বিষয়টি নিয়ে ওই

বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো: মাহমুদ হাসান বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে

প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা বরাবর অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষককে আমার দপ্তরে ডেকেছি। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত