হবিগঞ্জে চুনারুঘাট উপজেলার ৫ লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে রয়েছেন মাত্র চারজন মেডিকেল অফিসার। এ হাসাপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিকিৎসক সঙ্কটের পাশাপাশি নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী।
এছাড়াও চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব ঝামেলা এড়াতে রোগীরা বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছেন অন্য কোথাও। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় জরুরি ক্ষেত্রে রোগীদের স্থানান্তর করা হয় হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল বা সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সাত মাস ধরে প্রয়োজনীয় ওধুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর সরবরাহ নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চাপে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। সরকারিভাবে ক্যানুলা ও সিরিঞ্জ সরবরাহ কম হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ওষুধের অধিকাংশই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের আর্থিক চাপ বাড়ছে। অনেকে সেবা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের নার্স সুবর্ণা ও তানিয়া জানান, চিকিৎসা দিতে গেলে ক্যানুলা, সিরিঞ্জ ও স্যালাইনের মতো অতিপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী যথেষ্ট পরিমাণে থাকতেই হবে। বাধ্য হয়ে রোগীদের সেগুলো কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সেখানে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে বহু রোগী ভিড় জমান। এসব রোগীর পক্ষে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী বাইরের ফার্মেসি থেকে কেনা কঠিন।
নরপতি গ্রামের কাদির মিয়া জানান-চুনারুঘাট হাসপাতালে মাঝে মধ্যে যাই। কিন্ত দুঃখজন কোন ধরনের ওষুধ পাই না। এছাড়াও ভালো কোন ডাক্তারও ইেন। চুনারুঘাটের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক রোগীর স্বজন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, চিকিৎসকরা নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তবে সরঞ্জাম না থাকলে তাদেরই-বা কী করার আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে চিকিৎসা নিতে গেলে তাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক দৈনিক আমার দেশকে বলেন, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীর মজুত কম। তবুও চেষ্টা থাকে জনগণের কষ্ট লাঘবের।

