ইইউতে জিএসপি প্লাসের ৩৭ শতাংশ থ্রেশোল্ড শিথিল চায় বিজিএমইএ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৩৫

দেশের রপ্তানিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এবং ইইউর বাজারে রপ্তানি ধারা অব্যাহত রাখার জন্য জিএসপি প্লাস স্কিমের ৩৭% থ্রেশহোল্ড শিথিল করার জন্য ইইউ এর রাষ্ট্রদূতকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির নেতারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বুধবার বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠক করতে এলে এ দাবি জানান তারা। বৈঠকে শ্রম আইন সংস্কার, এলডিসি-পরবর্তী সময়ে জিএসপি প্লাস সুবিধা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

বিজ্ঞাপন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার। তার সঙ্গে ছিলেন ইইউ ডেলিগেশনের উপপ্রধান ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার (হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট) লোলে ভ্যালেন্টিয়ান লুচেসে।

বিজিএমইএ দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান, সহ-সভাপতি (অর্থ)মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ এবং পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।

আলোচনায় ইইউ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। ইইউ প্রতিনিধিদল জানায়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানদণ্ড অনুযায়ী শ্রম আইন সংস্কার করা ইইউর একান্ত চাওয়া।

বৈঠকে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) জমা দেওয়া সময়াবদ্ধ লেবার রোডম্যাপের গুরুত্ব ও এর বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই রোডম্যাপটি বাংলাদেশের শ্রম খাতের উন্নয়নের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।

সভায় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের কল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রগুলোর অর্জন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যান বিজিএমইএর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত ও আইনসঙ্গত প্রতিটি দাবির সঙ্গে বিজিএমইএ একাত্মতা পোষণ করে। এ ব্যাপারে বিজিএমইএ এর অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট বলে তিনি জানান।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়া অথবা অন্য আইনসঙ্গত ইস্যুগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানের জন্য গাজীপুর, আশুলিয়া, মিরপুর ও নারায়নগঞ্জে জোনভিত্তিক শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্র তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে বিজিএমইএ। তিনি আরও বলেন, পোশাক শিল্পে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক নিশ্চিত করার জন্য তার বোর্ড দায়িত্ব নেয়ার পরপরই ৮১ টা শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পরেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে। তারা দেশের রপ্তানিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এবং ইইউর বাজারে রপ্তানি ধারা অব্যাহত রাখার জন্য জিএসপি প্লাস স্কিমের ৩৭% থ্রেশহোল্ড শিথিল করার জন্য ইইউ এর রাষ্ট্রদূতকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

বিজিএমইএ নেতারা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাসটেইনেবিলিটি, সবুজ রুপান্তর প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিল্প যে অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তার স্বীকৃতিস্বরূপ ইইউ জিএসপি প্লাস স্কিমের ৩৭% থ্রেশহোল্ড শিথিল করবে, বলে তারা আশা করেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত