শিক্ষাব্যবস্থা এখনো ব্রিটিশ ও ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে চলছে: সাদিক কায়েম

প্রতিনিধি, শেকৃবি
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৬: ০০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখনো ব্রিটিশ এবং ভারতীয় প্রেসক্রিপশনের দেয়া শিক্ষা কমিশন অনুযায়ী চলছে। যার কারণে আমরা সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের পরিবর্তে অসৎ ও অনৈতিক মানুষ পাচ্ছি। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে। মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থারও আমূল পরিবর্তন দরকার।

তিনি বলেন, দেশে নৈতিকতা সম্পন্ন লোক প্রয়োজন। গত খুনি হাসিনার সময় আমরা অনেক বড় বড় পর্যায়ের লোক দেখেছি যারা বেশিরভাগই ছিলেন দুর্নীতিবাজ এবং অসৎ ব্যক্তি। তারা কোনোভাবেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না। ছাত্রশিবির একজন নৈতিকতা সম্পন্ন এবং মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরিতে কাজ করে। শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারকে ছাত্রশিবির তাদের প্রধান ৫টি কাজে একটি মনে করে। এটি সংস্কারের দাবিতে ছাত্রশিবির ইতোমধ্যে ৩০ দফা দাবি পেশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

গতকাল বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে শিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, কৃষি সেক্টরে উন্নতির জন্য কৃষি শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে গড়ে তোলা যাচ্ছে না। আমাদের দেশের উর্বর মাটি থাকা সত্ত্বেও পার্শ্ববর্তী দেশসহ পশ্চিমা বিশ্ব কৃষিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একসাথে কাজ করা উচিত। সেই সাথে শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনের সময় যাতে ‘কি’ থেকে ‘কেন’ আসতে পারে সে পদ্ধতিতে নিয়ে আসতে হবে।

ছাত্রশিবিরের এ কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, জুলাই আন্দোলন এবং এর আগে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রশিবিরের এখনও পর্যন্ত ৭ জন গুম অবস্থায় আছে। আমাদের ভাইয়েরা ক্যাম্পাসগুলোয় গুন-খুন, হামলা ও নির্যাতনের কারণে ছাত্রশিবির পরিচয় দিতে পারতো না। ক্যাম্পাসগুলোয় নামাজ পড়ায় শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন করা হতো। খুনি হাসিনার পতনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে সে নির্যাতন থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর আমরা বৈষম্যহীন ও ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বৈরাচারের দোসররা এখনো সর্বত্র ঘাপটি মেরে আছে। বর্তমান সরকারের ম্যান্ডেট ছিল স্বৈরাচারের বিচার করা,কিন্তু তারা একবছরেও তা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বিভেদ ও অনৈক্যের সুর দেখতে পাচ্ছি। এই বিভেদ ও অনৈক্য উসকে দিচ্ছে আমাদের দেশের একটা বড় দল বিএনপি। ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া তাদের ‘নোট অব ডিসেন্টের’ জুলাই শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা। গত ৫৪ বছরে এত রক্ত দেয়ার পরেও দেশ গঠনে এখনও আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারছি না। কোনো পক্ষ যদি আবারও ফ্যাসিবাদী হয়ে আসে আবারও রক্ত দিতে আমরা পিছ পা হবো না।

আবু সাদিক কায়েম বলেন, বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই আমরা আজকের নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, খুনি হাসিনার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের দমনের জন্য আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম সবসময় চালু রাখতে হবে। পাশাপাশি বিশ্বের মজলুম মানুষদের জন্যও আমাদের কথা বলে যেতে হবে। তাদের আজাদী আন্দোলনের ডাক ঢাকা থেকেই শুরু হওয়া উচিত।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত