সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আসা যাত্রা দলগুলোর অংশগ্রহণে ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে বিজয়ের মাসজুড়ে যাত্রাপালা প্রদর্শনী, প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে।
গতকাল ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬:৩০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় যাত্রাপালা ‘সিরাজউদ্দৌলা’। পালাটির পালাকার শচীন সেনগুপ্ত এবং পরিচালনায় জুয়েল রানা। যাত্রাপালাটি মঞ্চায়ন করেন নেত্রকোনার ‘প্রত্যয় বাংলাদেশ যাত্রাদল’।
খুলনার বিখ্যাত নাট্যকার শ্রী শচীন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত রচিত সিরাজউদ্দৌলা একটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক নাটক। বাংলা সাহিত্যের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও মঞ্চসফল এ নাটকটি ১৯৩৮ সালে রচিত হয় এবং ২৯ জুন, ১৯৩৮ কলকাতার নাট্যনিকেতনে প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল। প্রথম মঞ্চের সংগীত পরিচালক ছিলেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। সেখানে তিনি নিজের লেখা ৫টি গান পরিবেশন করেছিলেন।
১৯৩৯ সালের ২৪ নভেম্বর এটি প্রথমবারের মতো শ্রুতি নাটক হিসেবে কলকাতা বেতার থেকে প্রচারিত হয়েছিল। ১৯৩৮-২০২৫ সাল দীর্ঘ ৮৭ বছরে এ যাত্রাপালাটি অগণিতবার মঞ্চায়ন হয়েছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার জীবন, তাঁর পতন এবং পলাশির ট্রাডেজিকে কেন্দ্র করে রচিত এ নাটকটি নবাবের দেশপ্রেম, দৃঢ়তা এবং তাঁর করুণ পরিণতিকে ফুটিয়ে তুলেছে, যা সাধারণ দর্শকের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে, বাংলা যাত্রাপালায় একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।
এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মো. জহিরুল ইসলাম খান, নিবাস চন্দ্র শীল, এম. এ. সালাম গজনবী, শাহানুল কবির বাবুল, উৎপল চক্রবর্তী, মো. শহীদুল আলম দুলাল, রাখাল বিশ্বাস, বিজয় কুমার সরকার, মো. আজিজুল হক, আবু বক্কর সিদ্দিক মিন্টু, শাহানুল কবির বাবুল, অঞ্জন সরকার বাবন, মো. মজিবর রহমান, মো. মামুন মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল বারেক, সাইফুল ইসলাম, রাখাল বিশ্বাস, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. মজিবর রহমান, মো. মতিউর রহমান, সুবর্ণা বিশ্বাস, পূরবী রানী সরকার, সাধনা সরকার, কেয়া বালা, তুলি, রেবা রানী গোস্বামী প্রমুখ।
নেপথ্য শিল্পী, কলা-কুশলী হিসেবে ছিলেন পংকজ কুমার বিশ্বাস, আবু সাঈদ তালুকদার, তপন কুমার দাস, পহেলি দে, নাজিয়া আফরিন, সুমা সরকার, লীলা শীল, তুলি, রেবা রানী গোস্বামী, কেয়া বালা, সেতু রানী গোস্বামী, মো. মজনু মিয়া, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, মো. মোবারক হোসেন, মো. শহিদ মিয়া, মো. আব্দুল মতিন, শ্রী চরণ দাস, শেখ শামছুদ্দিন ও খোকন মিয়া প্রমুখ।
মাসব্যাপী এই যাত্রাপালা প্রদর্শনীতে নিবন্ধিত ৩৬টি যাত্রাদল ৩৬টি যাত্রাপালা এবং মহান বিজয় দিবসে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি যাত্রাদলের বিশেষ যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’সহ ৩৭টি যাত্রাপালা মঞ্চায়িত হবে। যাত্রাপালা প্রদর্শনীর টিকেটের মূল্য ১০০ টাকা। প্রদর্শনীর টিকেট বিক্রি হতে প্রাপ্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট যাত্রাদলকে প্রদান করা হবে। এছাড়াও প্রতিদিন বিকেল ৫ টা থেকে জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে থাকছে দেশাত্মবোধক যাত্রাগানের কনসার্ট। উল্লেখ্য, প্রতিদিনের প্রদর্শিত যাত্রাপালাগুলো জুরি বোর্ডের বিচারকদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

