প্লট-ফ্ল্যাট হস্তান্তরে অনুমোদন প্রথা বাতিল, ভোগান্তি কমবে মানুষের

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ১০

আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠান (কর্তৃপক্ষ) থেকে অনুমোদন গ্রহণের দীর্ঘদিনের প্রথা বাতিল করেছে সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্লট বা ফ্ল্যাটের উত্তরাধিকার, ক্রয়-বিক্রয়, দান বা ঋণ গ্রহণের অনুমতির জন্য লিজগ্রহীতাদের আর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নকৃত আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের হস্তান্তর-পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় সেবা সহজীকরণ, লিজগ্রহীতাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি লাঘব এবং দুর্নীতি দূরীকরণের লক্ষ্যে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

মূল পরিবর্তনসমূহ

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নকৃত ও বরাদ্দকৃত আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান বা হেবা সূত্রে নামজারি; হস্তান্তর (বিক্রয়, দান, হেবা বা বণ্টন) দলিল সম্পাদন বা বাতিল; আম-মোক্তার দলিল সম্পাদন বা বাতিল এবং ঋণ গ্রহণের অনুমতি প্রদানের জন্য লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন গ্রহণের বিদ্যমান প্রথা বাতিল করা হলো।

তবে প্লটের বিভাজন বা একত্রীকরণ এবং প্লট বা ফ্ল্যাটের ব্যবহার শ্রেণির পরিবর্তন (মাস্টার প্ল্যানের পরিবর্তন) এর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণের বর্তমান পদ্ধতি বহাল থাকবে।

দলিলগ্রহীতাকে ফ্ল্যাট বা ভবনসহ ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ২% (দুই শতাংশ) হারে ফি দিতে হবে। শুধু প্লট বা ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল মূল্যের ৩% (তিন শতাংশ) হারে ফি দিতে হবে। এই ফি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন দলিল সম্পাদনকালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুকূলে জমা দিতে হবে।

গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক উন্নয়নকৃত প্লট বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একই হারে এই অর্থ নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) হিসেবে মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে (কোড নম্বর: ১৩২০১০১১১৮৮২৭) আদায় করা হবে।

প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দলিল সম্পাদনের পর অবিকল নকলের একটি কপি (সার্টিফাইড কপি) এবং নামজারির রেকর্ডপত্র ক্রেতা বা দলিলগ্রহীতাকে ৯০ দিনের মধ্যে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানে দাখিল করতে হবে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করতে ব্যর্থ হলে দৈনিক ৫০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা যাবে।

লিজদাতা প্রতিষ্ঠানকে এই রেকর্ড দাখিলের ৩০ দিনের মধ্যে মালিকানা রেকর্ড হালনাগাদ করতে হবে।

কর্তব্য-কর্মে অবহেলা করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লিজ দলিলের মেয়াদ শেষে (নিরানব্বই বছর পর) তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নকৃত বলে গণ্য হবে এবং উপরে বর্ণিত হস্তান্তর ফি আদায়ও রহিত হয়ে যাবে।

আবাসিক ব্যতীত অন্যান্য (প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্য ও শিল্প) প্লট, ফ্ল্যাট বা স্পেসের হস্তান্তর ও নামজারির ক্ষেত্রে লিজদাতা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণের বিদ্যমান প্রথা বহাল থাকবে।

যে সকল ক্ষেত্রে প্রথা বহাল থাকবে

যে সকল আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে এবং উক্ত বিরোধে সরকারের স্বার্থের সংশ্লেষ রয়েছে।

যে সকল প্লট বা বাড়ি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত এবং পরে অবমুক্ত করা হয়নি।

জানুয়ারি ২০০৯ থেকে জুলাই ২০২৪ মেয়াদে বিশেষ বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট।

সরকারি এই প্রজ্ঞাপনটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে। অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপনের অধীন আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের তফসিল প্রকাশ করা হবে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত