ফ্লোরে দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন: ফায়ার সার্ভিস

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ০৭
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ০৯

রাজধানীর হাজারীবাগে আগুন লেগে পুড়ে গেছে একটি ভবনের তিনটি ফ্লোর। হাজারীবাগ কাঁচাবাজার এলাকার ফিনিক্স লেদার কমপ্লেক্স নামক সাত তলা ভবনের পঞ্চম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে ভবনটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলার তিনটি গোডাউনের সকল মালামাল পুরোপুরি পুড়ে গেছে।

শুক্রবার দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের আড়াই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক কে লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

পুড়ে যাওয়া তিন ফ্লোরে উচ্চ দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ার পাশাপাশি জুমার নামাজের বিরতিতে ভবনটিতে মানুষজন কম ছিলেন। এ কারণে কেউ হতাহত হয়নি বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। এদিকে পুড়ে যাওয়া গোডাউন মালিকরা বলছেন, কয়েক কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। সব হারিয়ে অনেকের রাস্তায় বসার উপক্রম হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস এর পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেইনেন্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপণের কোন ব্যবস্থা ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বারবার নোটিশ করা হলেও ভবনের মালিক তা শোনেননি। পুরাতন জরাজীর্ণ ওই ভবনের স্থায়িত্ব নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি।

উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)'র এক ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে বলে বিজিবি'র তরফ থেকে জানানো হয়। মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। ছিল নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ সদস্যরাও।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করেন। পরে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি বলেন, হাজারীবাগ কাছে বাজার এলাকার ফিনিক্স লেদার কমপ্লেক্সে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায় দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে। একে একে ঘটনাস্থলে আমাদের ১১টা ইউনিট উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে অংশ নেয়। এটি একটা পুরাতন ভবন। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে প্লাস্টিক, গার্মেন্টস ও লেদার সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের মালামালের গোডাউন রয়েছে। তিন ফ্লোরে উচ্চ দাহ্য পদার্থের বিভিন্ন সামগ্রী (মাল্টি অকুপেন্ট) থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

কি কারণে আগুন লেগেছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ইলেকট্রিক শট সার্কিট, সিগারেটের আগুন কিংবা অন্য কারণেও হতে পারে। তবে তদন্ত করে সুনির্দিষ্ট কারণ বের করতে হবে।

আগেও এই ভবনে আগুন লেগেছিল, তারপরও এই ভবনটি কীভাবে সচল আছে, এটা ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতা কি-না এমন প্রশ্নে ফায়ার সার্ভিস পরিচালক বলেন, আমাদের দিক থেকে কোন গাফিলতি কিংবা ব্যর্থতা নেই। আমাদের তরফ থেকে বারবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু মালিকপক্ষ ফায়ার সেফটির কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সেক্ষেত্রে ব্যর্থতা থাকলে মালিকপক্ষের, ফায়ার সার্ভিসের নয়।

তাছাড়া ভবনটি জরাজীর্ণ, পুরাতন। অবকাঠামোগত দৃষ্টিকোণ থেকে ভবনটি কতটুকু মজবুত, তা দেখার বিষয়-যোগ করেন এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ভবনে ফায়ার সেফটি অবশ্যই থাকতে হয়। আমরা সার্ভে করে দেখি, কি কি মালামাল থাকবে, সে অনুযায়ী ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অনুমোদন দেয়া হয়।

আগুন নেভাতে দেরি হলো কেন, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই এলাকায় রাস্তায় বৈদ্যুতিক লাইন, পিয়ারসহ এলাকার পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তিমত্তা দেখাতে পারিনি। তারপরও তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতি সম্বন্ধে পরে জানানো হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত