দেশের বেসরকারি উচ্চশিক্ষা খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষক প্রতিনিধি এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা। বর্তমানের বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি ও নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালার পরিবর্তন না হলে এ খাতে বড়ো ধরনের অস্থিরতা ও সংঘাতের আশঙ্কা করছেন তারা।
সোমবার বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই উদ্বেগের কথা জানায়। সম্প্রতি ঢাকায় ইউজিসি প্রস্তাবিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ (সংশোধনী) খসড়া এবং চলমান প্রশাসনিক জটিলতা’ শীর্ষক এক জরুরি যৌথ বৈঠকে এই অবস্থান তুলে ধরা হয়। দেশের ৮৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ টিউশন ফি প্রদানের পাশাপাশি ভ্যাট ও বিভিন্ন কর বহন করেন। অথচ তারা কোনো সরকারি স্কলারশিপ, স্টুডেন্ট লোন বা গবেষণা সহায়তা পান না। তারা এই অবস্থাকে অত্যন্ত অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক হিসেবে অভিহিত করেন।
সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন, আধুনিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে ইউজিসির দীর্ঘসূত্রতা এবং পিএইচডি কার্যক্রম চালুর অনুমতি প্রদানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের স্থবিরতা শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক কর্মবাজারে পিছিয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো সরকারি অনুদান বা জমি ছাড়াই নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত হলেও ইউজিসির অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কারণে চার লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার শিক্ষক-গবেষক, অভিভাবক ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা আজ গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
বৈঠকে জানানো হয়, বাস্তবসম্মত সমাধান ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বান্ধব নীতিমালা না করা হলে এ খাতে সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নের স্বার্থে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি-কে অংশীজনদের সাথে নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
যৌথ বৈঠকের ৬ দফা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়— ১) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন; ২) নিয়ন্ত্রণ ও বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত শিক্ষা বান্ধব নীতি অনুসরণ; ৩) শিক্ষার্থী ঋণ ও গবেষণা সহায়তা কার্যক্রম চালু; ৪) শিল্প ও শিক্ষা খাতের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক জোরদার; ৫) ভ্যাট ও অপ্রয়োজনীয় কর পুনর্বিবেচনা; ৬) নির্দিষ্ট সময়সীমা ও স্বচ্ছ অনুমোদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

