দেশের বিভিন্ন স্থানে মাধ্যমিকের শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে স্থগিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষার একটি আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নেয়া হচ্ছে। একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশেষ ব্যবস্থায় আজকের এ পরীক্ষার আয়োজন করেছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের উপস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক। সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হয় পরীক্ষাগুলো।
শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান সেশনজট কাটাতে পরীক্ষার্থীদের সুবিধা ও সময়সূচি স্বাভাবিক রাখতেই ছুটির দিনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পাবনা, সিলেটসহ কয়েক জেলায় শনিবার নেয়া হবে মাধ্যমিকের স্থগিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষার একটি।
এদিকে আগামী রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে। ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা কর্মবিরতির কারণে, যেসব পরীক্ষা হয়নি সেগুলো ছুটির দিনে নিবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা।
শুক্রবার দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতা ও প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক শাহীনুর আল আমিন আমার দেশকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে কর্মচারীদের সহায়তায় অধিকাংশ পরীক্ষাই হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় যেসব পরীক্ষা হয়নি, তা ছুটির দিনে নিবেন শিক্ষকরা।
শাহীনুর আল আমিন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ৪৩ শিক্ষককে গণ বদলি করা হয়েছে এবং আরো ৫ শতাধিক শিক্ষক এ তালিকায় রয়েছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ১৬ জন আহবায়কের যৌথ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়ে সারাদেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিতকরণের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য ৩ দফা দাবি আদায়ে বাস্তবায়ন পরিষদ এবং সংগঠন ঐক্য পরিষদ এর চলমান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে, আগামী রোববার থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। ফলে আগামী রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
উভয় পরিষদের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তবে অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের জেরে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে মানসিক চাপের মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন। এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকেরা পাঠদান করেন।

