বেশির ভাগ নেতার ঈদ নির্বাচনি এলাকায়

ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দেশবাসী। শেখ হাসিনা সরকার বিদায়ের পর বিএনপিসহ বিরোধী জোটের নেতাকর্মীরা এবার বাধাহীন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করবেন।

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশির ভাগ নেতা নিজ নির্বাচনি এলাকায় ঈদ কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন। ইসলামি দলগুলোর কয়েকজন শীর্ষনেতা সৌদি আরবে ঈদ পালন করবেন।

বিএনপি

১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে বাধাহীন ঈদ পালন করবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। চিকিৎসাধীন দলের প্রধান খালেদা জিয়া প্রায় অর্ধযুগের বেশি সময় পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ উদযাপন করবেন। বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও তিন নাতনির সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন তিনি।

এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলটির শীর্ষনেতা থেকে শুর করে সম্ভাব্য সব প্রার্থী নিজ সংসদীয় আসনে ঈদ উদযাপন করবেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদের জামায়াত শেষে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে যুমনায় শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ঢাকায় ঈদের নামাজ পড়বেন। সেলিমা রহমান ঈদ করবেন ঢাকায়। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান নরসিংদী, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জ এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ নিজ জেলা কক্সবাজারে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

জামায়াতে ইসলামী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ঢাকায় নিজ বাড়িতে ঈদ করবেন। নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান মক্কায়, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাড়িতে, মাওলানা শামসুল ইসলাম চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিজ বাড়িতে ঈদ করবেন। সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনার খানজাহান আলী থানায় নিজ বাড়িতে, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম কুমিল্লার লাকসামে, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়, হামিদুর রহমান আযাদ ঢাকার বসুন্ধরায়, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মক্কায়, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জম হোসাইন হেলাল বরিশালে নিজ বাড়িতে, মাওলানা শাহজাহান চট্টগ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল চাপাইনবাবগঞ্জের নির্বাচনি এলাকা, সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ পটুয়াখালীর নির্বাচনি এলাকায়, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সিলেটে এবং সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম লক্ষ্মীপুরে নির্বাচনি এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।

বিভিন্ন দল

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির শরিক দলের শীর্ষনেতারাও ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু নিজ সংসদীয় আসন ফেনীতে ঈদ উদযাপন করবেন। ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার ঢাকায়, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানিয়েছেন।

ইসলামী আন্দোলন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। তিনি এবারের সৌদিতেই ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। ঈদের দুইদিন পর তিনি দেশে ফিরবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারি আলহাজ আবদুল আউয়াল মজুমদার ঈদ করবেন ঢাকায়। বায়তুল মোকাররমে নামাজ শেষে ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করবেন তারা। মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ঢাকায় ও সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম নিজ এলাকায় কুষ্টিয়ায় ঈদ উদযাপন করবেন।

খেলাফত মজলিস

খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ রাজধানীতে ঈদ উদযাপন করবেন। পরে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে যোগ দেবেন। দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের নিজ এলাকা হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঈদ করবেন। দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন খুলনায়, নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ঢাকার হাজারীবাগে, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকায়, যুগ্ম মহাসচিব মুনতাসির আলী নিজ নির্বাচনি এলাকা বিশ্বনাথে, যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম সিরাজুল মামুন নারায়ণগঞ্জে এবং যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল বাউফলে নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক মোহাম্মাদপুরে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ তার নির্বাচনি এলাকা শরীয়তপুরের জাজিরায়, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ রাজধানীর লালবাগের ইসলামবাগে, আরেক নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করীম জালালী নির্বাচনি এলাকা সিলেট এবং সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী নির্বাচনি এলাকা সুনামগঞ্জে ঈদ উদযাপন করবেন। এ ছাড়া সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন নিজ নির্বাচনি এলাকা ভৈরবে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঈদের দিন রাতের ফ্লাইটে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে তারা সৌদি আরবে যাওয়ার কথা রয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দীন সিলেট বিয়ানীবাজার আঙ্গুরা মোহাম্মদপুরে ঈদ করবেন। আর মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী নিজ জন্মস্থান নীলফামারীর ডোমার সোনারায়ে ঈদ করবেন।