বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক ব্যবহারে বিমোহিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট এবং কেবিন ক্রুরা। পুরো ফ্লাইটে দায়িত্বরত কেবিন ক্রুদের কোনো আদেশই দেননি তিনি। বরং আগ বাড়িয়ে ট্রলিব্যাগ বহন থেকে শুরু থেকে সবকিছুই নিজেরা বহন করেছেন। পাইলটরা ককপিটে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেও তারেক রহমান সেফটি সিকিউরিটি রুলস ভেঙে যাননি সেখানে। পুরো ফ্লাইটেই তিনি সময় কাটিয়েছেন বই পড়ে ও ল্যাপটপে প্রয়োজনীয় লেখা পড়ে।
ফ্লাইট বিজি-২০২-এ তারেক রহমান ও তার পরিবারের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন কেবিন ক্রু আন্নামা। তিনি বলেন, অসাধারণ তারেক রহমান, জোবাইদা ও জাইমা রহমানের ব্যবহার, আচার। কোনো অহংকার নেই। তাদের ফ্লাইটে ডিউটি করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং নিজেকে গর্বিত মনে করছি। আন্নামা আমার দেশকে জানান, তারা সবাই এত ভদ্র যে, আমাকে একটি ব্যাগও ধরতে দেননি।
সূত্র জানায়, খাবারেও তারেকের পছন্দ ছিল অতিসাধারণ। সাদা ভাত, ডাল, গরুর মাংস ও আচার। সকালের নাস্তায় ছিল ব্রেড, ডিমের অমলেট ও লিকার চা।
ফ্লাইট বিজি-২০২-এর বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারের একজন ক্যাপ্টেন আমার দেশকে জানান, পাইলট হিসেবে একটি উড়োজাহাজ চালানোই আমার কাজ এবং দায়িত্ব। তবে তারেক রহমান ও তার পরিবারকে বহনকারী উড়োজাহাজটি চালাতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। ১৭ বছর পর তারেক রহমান দেশে ফিরছেন, তাও আমার ফ্লাইটে! এরচেয়ে বড় আনন্দ আমার আর কখনো হবে না। তার সেফটির বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা সব সময় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ফ্লাইটটি চালিয়েছি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-২০২ গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকাগামী ওই ফ্লাইটে দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরলেন তারেক রহমান।
জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি চলতি বছরের অন্যতম সর্বাধিক নজরদারির আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। কারণ, তারেক রহমানের দীর্ঘ প্রবাস শেষে দেশে ফেরা রাজনৈতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
এর আগে বিজি-২০২ লন্ডনের হিথ্রো থেকে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করে। ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ১২ মিনিটে সিলেটে অবতরণ করে, যা নির্ধারিত সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৩ মিনিট বিলম্বিত ছিল। উড়োজাহাজটি গত ২৪ ডিসেম্বর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে (গ্রিনিচ মান সময়) যাত্রা শুরু করে, যেখানে টেক-অফে ১১ মিনিট বিলম্ব হয়।
উচ্চমাত্রার গুরুত্ব বিবেচনায় ফ্লাইটটি পরিচালনায় অভিজ্ঞ সিনিয়র ককপিট ক্রু নিয়োগ দেয় বিমান বাংলাদেশ। ক্যাপ্টেন ইমামুল পাইলট-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট রাশেদিন ও আসিফ ইকবাল। বিমান চলাচল-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কেবিন ক্রু নিয়োগ দেওয়া বিমানের নিয়মিত পরিচালন প্রটোকলের অংশ।
বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি লন্ডন থেকে সিলেট পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ৯৮৭ মাইল পথ পাড়ি দেয়। এ সময় উড়োজাহাজটি ৩৯ হাজার ফুট উচ্চতায় গড়ে ঘণ্টায় ৫৯৮ মাইল বেগে উড্ডয়ন করে। সিলেট থেকে ঢাকায় শেষ ধাপের যাত্রায় সময় লাগে প্রায় ২৩ মিনিট।
ফ্লাইট বিজি-২০২-এ তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ছিল আসন নম্বর এ-ওয়ান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। একই ফ্লাইটে বিএনপির প্রায় ৫০ শীর্ষস্থানীয় নেতাও দেশে ফেরেন, যা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের রাজনৈতিক গুরুত্বকে আরো স্পষ্ট করেছে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

