তারেক রহমান ও ড. ইউনূস বৈঠক নজিরবিহীন: ডা. তাহের

উপজেলা প্রতিনিধি, দেবিদ্বার (কুমিল্লা)
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫, ১৭: ১৫
আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১৭: ৩১

একটি দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে রাষ্ট্র প্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, প্রেসব্রিফিং এবং স্টেটমেন্টকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শুক্রবার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদে জামায়াত আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এটি সমীচীন হয়নি, এটা হতে পারে না। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ই্উনূস সব দলের সঙ্গে বসে জয়েন করতে পারতেন। এখানে আমাদের আপত্তি ছিল এবং সেটাকে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে স্টেটমেন্ট দিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছি এবং দ্বিতীয় ধাপের যে আলোচনার কথা ছিল সেটা আমরা বয়কট করেছি।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা টেলিফোনে জামায়াত আমিরের সঙ্গে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন ‘আমরা বা আমি কোনোভাবে কোনো দলের প্রতি অনুরাগী নই।’ প্রধান উপদেষ্টা জামায়াত আমিরকে আরো বলেছেন, ‘আমি পরিপূর্ণ একজন নিরপেক্ষ মানুষ, আপনারাও আমাদের পছন্দের মানুষ, আমাকে সময় দিন, আমি প্রমাণ করব যে আমি নিরপেক্ষ এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার আমি সেটাই করব। আপনারা আমাকে একটু সুযোগ দিন।’

তাহের আরো বলেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়েছে, আমরা বলেছি এই বৈঠকটি অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কারণ প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও সব দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে আমরা চেয়েছিলাম ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। সেই হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন, আমরা বলেছি যদি ফেব্রুয়ারিতে হয়, তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ এটা আমাদের পূর্বের ঘোষিত তারিখের মধ্যেই পড়েছে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বর্তমান সময়ে যে নিয়ম রয়েছে তা হচ্ছে সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এটা নির্বাচিত হবে, আমরা বলেছি, শুধু পার্লামেন্ট সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচিত হলে যারা মেজরিটি হয়ে সরকার গঠন করবে প্রেসিডেন্টরা তাদেরই হয়ে কাজ করবেন, কারণ তাদের ভোট বেশি। এ জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে সিস্টেম সেটাকে আমরা আরো বাড়িয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তাব করেছি। যেমন সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে একটা ইলেক্টোরাল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। তাতে যে সুবিধা হবে, একজন উপযুক্ত, জাতীয়ভাবে সম্মানিত, দল কানা নহে এমন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন। জামায়াত এই নীতিতে বিশ্বাস করে। আরেকটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, যেকোনো প্রধানমন্ত্রী জীবনে দু’বারের বেশি একাধারে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

এ বিষয়ে বিএনপি ছাড়া অধিকাংশ দল একমত হয়েছেন। কিন্তু এটা এখনো ফাইনাল হয়নি, আগামী রোববার এই প্রস্তাবের মধ্য দিয়েই আবার আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা একটি নতুন প্রস্তাব এনেছি তা হলো, সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা বিল এবং বাজেট। এই তিন প্রস্তাবের বাইরে আর যেকোনো বিষয়ে একই দলের এমপি সে দলের মতের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন। এ ব্যাপারেও আমরা সবাই একমত হতে পেরেছি।

তাহের আরো বলেন, জামায়াত প্রথম থেকেই বলে আসছে, আগে স্থানীয় নির্বাচন, আমরা মনে করি ডিসেম্বরে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে এরপর যে কয়েক মাস থাকবে, সে সময়ে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে না। বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে আমাদের ভালো সুসম্পর্ক রয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা এটি এম মাসুম, কুমিল্লা উত্তর জেলা আমির অধ্যাপক আ. মতিন, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামিম সাঈদী, মীর কাসেম আলী সন্তান ব্যারিস্টার আরমান বিন কাশেম, গার্ডিয়ান পাবলিকেশন চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ আবু তাহের, গাজীপুর মহানগরীর জামায়াতে সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, কুমিল্লা উত্তর জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহিদ প্রমুখ।

এমএস

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত