অনৈতিকভাবে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় অবৈধভাবে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণের অভিযোগে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। ইস্টার্ন হাউজিংকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে এ ফ্ল্যাট গ্রহণের মামলায় চার্জশিট দিয়েছে কমিশন। এ মামলায় টিউলিপের সাথে থাকা আরো দুই আসামি ছিলেন-রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, চলতি বছরের জুলাই মাসে মামলা তদন্তের একেবারে শেষ পর্যায়ে মামলার আসামি শাহ খসরুজ্জামান হাইকোর্টে একটি রিট করেন। তার রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট খসরুজ্জামানের তদন্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করে। পরে চেম্বার আদালতে গেলেও দুদক ‘নো অর্ডার’ আদেশ পায়। বিকল্প কোনো উপায় না পেয়ে দীর্ঘ ৫ মাস পর আসামি খসরুজ্জামানকে বাদ দিয়ে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক।
দুদক জানায়, ইষ্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের একটি পত্রে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে। রাজউকে প্রেরিত ফ্ল্যাট মালিকদের তালিকার নোটশীটেও তার নাম রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের নথিতে দেখা যায়, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০১ সাল থেকেই ফ্ল্যাটটি তার দখলে আছে বলে ইষ্টার্ন হাউজিং তথ্য প্রদান করেছিল। তদন্তে আরো জানা যায়, ২০০২ সালে রেজিস্ট্রি হওয়া ফ্ল্যাটটি তিনি আয়কর নথিতে বহু বছর গোপন রেখে ডেভেলপারকে অগ্রিম প্রদানের মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া, ছোট বোনের কাছে হেবা করার যে দলিল তিনি দেখান, তা জাল প্রমাণিত হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নথিতেও ফ্ল্যাটটির কর পরিশোধ ও নাম জারির রেকর্ড এখনো তার নামেই বহাল রয়েছে, যা মালিকানা গোপনের প্রচেষ্টাকে আরো স্পষ্ট করে।
তদন্তে প্রাপ্ত এসব প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক দণ্ডবিধির ১৬১/১৬৫(ক)/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও সরদার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

