অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: অধ্যাপক মুজিব

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪০

নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানালেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সরকার এসি রুমে বসে থেকে শিক্ষকদের  এভাবে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে বসিয়ে রাখতে পারে না। শিক্ষকরা এভাবে বেতন ছাড়া মানবেতর জীবনযাপন করবে জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ননএমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচীতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন,  সরকার অনুমোদন দিয়েছে কিন্তু খবর নেওয়ার কোন ব্যবস্থা সরকার করে নাই। প্রায় ২০ বছর বেতন পায় না এমন ননএমপিও শিক্ষকরা এখানে আছেন। জামায়াতে ইসলামী  আপনাদের ননএমপিও শিক্ষকদের অধিকারের সাথে আছে। সরকারকে বলব শিক্ষকদের জন্য উত্তম সমাধান করুন। ৭৫ হাজারেরও বেশি ননএমপিও শিক্ষকরা বিনা বেতনে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। সন্তানদের সমস্যা সমাধানের জন্য দেশের সাধারণ মানুষ আপনাদের পাশে নেমে আসবে। সরকারের উচিত আপনাদের কাছে এসে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করবে। আপনাদের নির্ধারিত কর্মসূচী থাকা দরকার। আপনাদের বক্তব্য পয়েন্ট আকারে সরকারের কাছে পৌঁছানো দরকার। সামনে  জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে নভেম্বর ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা। এই পরীক্ষা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবন্ধি, ইবতেদায়ী ও ননএমপিও শিক্ষকদের সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করবে বলে আশা করছি।  আপনাদের সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সরকার সেই চিঠির কোন উত্তর এখনও পাই নাই। আল্লাহর আইন চালু হলে আপনাদের সমস্যার সমাধান হবে। মজলুম মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করার তৌফিক দান করুন।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, নিজেদের ঘামকে পানি করে কোনরকম সুবিধা গ্রহণ না করে আপনারা মানুষের মৌলিক অধিকার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ভাবতেও অবাক লাগে শিক্ষকদের রাস্তায় রেখে উপদেষ্টারা এসি রুমে বসে আছে?  গত জুলাই বিপ্লবে আপনারা ভূমিকা রেখেছেন বলেই বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ আপনাদের বঞ্চিত করেছে। আপনারা ১৮ কোটি মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। যদি কোন কারণে দাবি উঠে শিক্ষকদের দাবি মানতে হবে, নইলে সরকারকে গদি ছাড়তে হবে। তাহলে সরকার সামাল দিতে পারবে না। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরুদণ্ড তৈরির কারিগরদের রাস্তায় বসিয়ে রাখলে সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হতে পারে। বাজেট দেওয়া কঠিন নয়, বরং পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা শিক্ষকদের এই দাবির বিষয়ে উদাসীনতা দেখাচ্ছে।  শিক্ষকদের এই যৌক্তিক দাবি মেনে নিলে নব্য ফ্যাসিস্টদের কৃতিত্ব থাকবে না, তাই তারাও বাঁধা দিচ্ছে। অনুমোদন আছে কিন্তু বেতন নাই। এটা শুধু তালবাহানা। অনুমোদন দেবেন,  বেতন দেবেন না কেন? গত এক বছরে যে দুর্ণীতি হয়েছে,  তা ফেরত নিয়ে আসলেই শিক্ষকদের বেতনের সমস্যা কেটে যাবে। উন্নত জাতির শর্ত হচ্ছে শিক্ষকদের সম্মান দেওয়া।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সেক্রেটারী ড. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন,  গত রমজান মাসে ইফতার-সেহরি খেয়ে না খেয়ে আন্দোলন করেছিল সম্মানিত ননএমপিও শিক্ষক সমাজ। আগামীকাল প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের   বৈঠকে যেন ননএমপিও শিক্ষকদের এমপিও করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আরও বক্তব্য দেন শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষা ফেডারেশনের মহাসচিব এবিএম ফজলুল করিম প্রমুখ।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত