অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া কোন দলে যোগ দান করবেন এটি নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রে এনিয়ে আলোচনা চলছে।
গণঅধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে সদ্য বিদায়ী এই উপদেষ্টা যোগ দান করবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এবিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয় বলে আমার দেশকে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। আসিফ মাহমুদ তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনেও জানিয়েছেন, তিনি কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন তা নিশ্চিত নয়। এদিকে আসিফ মাহমুদের পছন্দের আসন ফাঁকা রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি)। সেক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দানকারীদের দল এনসিপিতেও যোগদান করার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
আসিফ মাহমুদের পছন্দের আসন ঢাকা ১০। কিছুদিন আগেই তিনি এই আসনে (ধানমন্ডি এলাকা) ভোটার হয়েছেন। এটি থেকেই যে তিনি লড়বেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। ঢাকা-১০ আসনটিতে তার মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে খবর প্রকাশিত হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ফেসবুকেও এই আসন থেকে ভোট করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন আসিফ মাহমুদ।
আসিফ মাহমুদের পছন্দের আসনটি ফাঁকা রেখেছে গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি। বিএনপি প্রথম দিকে ফাঁকা রাখলেও দ্বিতীয় ধাপে সেখানে প্রার্থী দিয়েছে দলটি। ঢাকা ১০ এ বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হয়েও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার। তবে প্রার্থী দিলেও এটি চূড়ান্ত নয় বলেও জানিয়েছে দলগুলো। ফলে দলদুটিতেও অংশগ্রহণ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা দুটিই রয়েছে তার।
গণঅধিকার পরিষদে আসিফ মাহমুদের যোগদানের বিষয়ে জোর গুঞ্জন রয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদ খান বলেন, এখনো বিষয়টি নিশ্চিত না। তবে একসময় আমাদের সাথে রাজনীতি করেছে। তার জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা। চূড়ান্ত কোন আলোচনা এখনো হয়নি, তবে সার্বিক বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ আছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসিফ মাহমুদ পদত্যাগ করেছে -সে যেকোনো দলে যোগদান করতে পারে। এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত -এনসিপিতে যাবে, নাকি বিএনপিতে যাবে, নাকি গণঅধিকার পরিষদে আসবে?
গণঅধিকারে যোগদান করলে আসিফ মাহমুদকে কোন পদ দেওয়া হতে পারে -জানতে চাইলে রাশেদ খান বলেন, আমাদের হাত ধরে রাজনীতিতে এসে আমাদের স্নেহের ছোট ভাই আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। এমনকি আসিফ উপদেষ্টাও হয়েছে। সে যদি এখন মনে করে যে তার ভাইদের সাথে রাজনীতি করবে, সেটা সে আগেও করেছে এখনো চাইলে করতে পারে। কারণ কিছুদিন আগ পর্যন্ত সে আমাদের সাথেই ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘনিষ্ঠতার স্মৃতিচারণ করে রাশেদ বলেন, ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষে যে সময় সে আসে, সে সময় থেকে আমার সাথে তার একটা ঘনিষ্ঠতা ছিল। আমি অনেকটা তাকে সবসময় পরামর্শ দিতাম কিভাবে রাজনীতি করবে। যেটা তার কাছে আপনি প্রশ্ন করলে সেও আশা করি এ বিষয়ে বলবে। সেই জায়গা থেকে তার প্রতি তো স্নেহ ভালোবাসা আছে। সে যদি মনে করে যে -আমরা একসাথে রাজনীতি করব সেই সুযোগ আছে। সেটা সে চাইলে করতে পারে। এবিষয়ে তার সাথে আলোচনাও আছে, কিন্তু কোন কিছু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আর এই আলোচনা শুধুমাত্র গণঅধিকারে আসার বিষয়ে না, বিভিন্ন বিষয়ে হয়। রাজনৈতিক বিষয়ে, নির্বাচন পরবর্তীতে করণীয় কী করতে চায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনও কোন কিছু চূড়ান্ত না। সে বিএনপিতেও যেতে পারে। সে গণঅধিকার পরিষদেও আসতে পারে। আবার এনসিপিতেও যেতে পারে। চাইলে সে নিজেও নতুন দল গঠন করতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার সাথে।
এদিকে আজ ১২৫ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে এনসিপি। দলটি ঢাকা ১০ আসনে কাউকে প্রার্থী না দিয়ে ফাঁকা রেখেছে। আসিফ মাহমুদের পছন্দের আসন ফাঁকা রাখায় এনসিপিতেও তার যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। আবার তার জন্য বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীও ঢাকা ১০ আসনে প্রার্থীতায় পরিবর্তন আনতে পারেন। তাই তিনি কোন দলে যোগদান করবেন? -এপ্রশ্নের উত্তর এখনও দেওয়া যাচ্ছে না।
এবিষয়ে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে আসিফ মাহমুদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করব। কিন্তু কোন দল থেকে নির্বাচন করব সেটি এখনও নিশ্চিত না। কারণ এখনও বলার মতো তেমন কিছু নেই।

