রাজধানী ঢাকার বনানীর একটি স্পা সেন্টারের আড়ালে নারীদের যৌনবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে ৬ জনকে আটক এবং ১২ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের মধ্যে ৭ জনই অপ্রাপ্তবয়স্ক। সিআইডির মানবপাচার ইউনিট গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার ও আটক করে।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বনানীর “রিলাক জোন বিউটি পার্লার এন্ড সেলুন” নামে পরিচিত স্পা সেন্টারের ভিতর বিভিন্ন জেলা থেকে প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় আনা নারী ও কিশোরীদের অনৈতিক ও মানবপাচারমূলক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ ছিল। অভিযানকালে স্পা সেন্টারের ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কক্ষে ঘর ভাড়া করে রাখা অবস্থায় এসব ভুক্তভোগীকে পেয়ে সিআইডি তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে।
উদ্ধার হওয়া নারীরা জানিয়েছেন, গ্রামের বা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে তাদেরকে উচ্চ বেতনের চাকরি, নিরাপদ কর্মসংস্থান ও থাকার ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে ঢাকায় নেওয়া হয়। শহরে পৌঁছানোর পর চাপ প্রয়োগ, ভয়ভীতি ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে স্পা সেন্টারের আড়ালে চলমান অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করা হতো।
সিআইডি মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আটক সদস্যদের মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালী, রংপুর, নোয়াখালী ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তারা সকলে মিলে ভুক্তভোগীদের নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের কাজে ভূমিকা রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভবন মালিক দেলোয়ার হোসেন জানতেন যে, ভাড়া ফ্ল্যাটটি অনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে; তবুও তিনি এটি ভাড়া দিয়েছেন। অন্যদিকে স্পা সেন্টারের মালিক মো. মোবারক আলী ওরফে সবুজেরও মূল অভিযুক্তদের একজন হিসেবে মামলায় নাম উল্লেখ রয়েছে।
সিআইডি বলেছে, মানবপাচার ও যৌন শোষণের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ জনগণকে প্রতারণামূলক চাকরি ও উচ্চ আয়-সংক্রান্ত প্রলোভনে পড়তে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, কারণ এই ধরনের চক্র সাধারণত সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল নারীদের টার্গেট করে থাকে।

