জাতিসংঘের তদন্ত

মিয়ানমারের বন্দিশিবিরে ভয়াবহ নির্যাতনের প্রমাণ

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ৩২
ছবি: ব্লুমবার্গ

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, তারা মিয়ানমারের বন্দিশিবিরগুলোতে ‘পরিকল্পিত নির্যাতনের’ প্রমাণ পেয়েছেন। নির্যাতনের সঙ্গে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত সংস্থা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।

আন্তর্জাতিক আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘন তদন্তের জন্য ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন তদন্ত সংস্থা দ্য ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম) । সংস্থাটি জানায়, যে আটক ব্যক্তিদের মারধর, বৈদ্যুতিক শক, শ্বাসরোধ এবং প্লায়ার দিয়ে নখ অপসারণের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

তদন্ত দলের প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান তাদের ১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলেছেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যসহ উল্লেখযোগ্য প্রমাণ উন্মোচন করেছি, যা মিয়ানমারের আটক কেন্দ্রগুলোতে পরিকল্পিত নির্যাতনের প্রমাণ দেয়।’

জাতিসংঘের তদন্ত দল জানিয়েছে, নির্যাতনের ফলে কয়েকজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে।

এমনকি এসব বন্দি শিবিরে শিশুদের নির্যাতনের প্রমাণও পেয়েছে জাতিসংঘ। নিখোঁজ বাবা-মায়ের প্রতিনিধি হিসেবে বেআইনিভাবে তাদের আটক রাখা হতো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের দলটি মিয়ানমারে তথ্য ও প্রবেশাধিকারের জন্য ২৪ বারের বেশি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে, যার কোনোটিরই উত্তর দেয়নি মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবে বরাবরই নৃশংসতা অস্বীকার করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। বরং, তারা দেশের মধ্যে অস্থিরতার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করে আসছে।

এক বছর ধরে কমপক্ষে ১ হাজার ৩০০ সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে অনুসন্ধানটি চালানো হয়। আইআইএমএম জানিয়েছে, অপরাধীদের মধ্যে উচ্চপদস্থ কমান্ডাররা রয়েছে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

আইআইএমএম জানিয়েছে, অপরাধীদের মধ্যে উচ্চপদস্থ কমান্ডাররাও রয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সরকারি বাহিনী এবং সশস্ত্র বিরোধী দল উভয়ই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।

মিয়ানমারে সবশেষ অস্থিরতা শুরু হয় ২০২১ সালে; সামরিক অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। জাতিসংঘের অনুমান, ভিন্নমত দমন এবং সামরিক বাহিনীর পদমর্যাদা জোরদার করার প্রচেষ্টায় কয়েক হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।

গত জুলাই মাসে, জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং চার বছরের জরুরি অবস্থা অবসানের ঘোষণা দেন এবং নির্বাচনের আগ পর্যন্ত নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করেন।

আইআইএমএমের তদন্তে ২০১১ সাল থেকে মিয়ানমারে সংঘটিত নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৭ সালে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান। যার ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

আরএ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত