মিশরের সঙ্গে একটি বড় প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরাইল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার এ চুক্তিকে ইসরাইলের ইতিহাসে “সর্বকালের বৃহত্তম গ্যাস চুক্তি” এবং একটি “ঐতিহাসিক মুহূর্ত” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বুধবার মধ্যপ্রচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল-আরাবিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে জানান, লেভিয়াথান প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র থেকে মিশরে গ্যাস সরবরাহের এই চুক্তির মোট মূল্য ১১২ বিলিয়ন শেকেল, যা প্রায় ৩৪.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। এর আগে গত আগস্টে ইসরাইল লেভিয়াথান ক্ষেত্র থেকে মিশরে সর্বোচ্চ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের গ্যাস রপ্তানির জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমি আজ ইসরাইলের ইতিহাসের বৃহত্তম গ্যাস চুক্তি অনুমোদন করেছি। আমেরিকান কোম্পানি শেভরন এবং ইসরাইলি অংশীদারদের সঙ্গে করা এই চুক্তির আওতায় মিশরে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।”
অন্যদিকে, একই সময়ে গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলের সামরিক অভিযানে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বলছে, অবরোধ, ব্যাপক বোমাবর্ষণ এবং অবকাঠামো ধ্বংসের ফলে গাজায় খাদ্য, পানি, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। শিশু ও নারীদের মৃত্যুর হার বিশেষভাবে উদ্বেগজনক বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই চিত্র ইসরাইলের নীতির একটি তীব্র বৈপরীত্য তুলে ধরে। একদিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বৃহৎ অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা, অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত ও মানবিক দুর্ভোগ। সমালোচকদের দাবি, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার কথা বললেও গাজায় চলমান সামরিক কার্যক্রম সেই স্থিতিশীলতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সাল থেকে মিশরের গ্যাস উৎপাদন কমতে শুরু করে। এর ফলে দেশটি আঞ্চলিক জ্বালানি সরবরাহ কেন্দ্র হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে সরে আসে এবং ঘাটতি পূরণে ক্রমশ ইসরাইলের গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

