এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন ৩ জন অর্থনীতিবিদ— জোয়েল মোকির, ফিলিপ আগিয়োঁ, ও পিটার হাওইট। মূলত ‘উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য’ তাঁদের দুজনকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় এ পুরস্কার ঘোষণা করে।
সোমবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস জানিয়েছে, "উদ্ভাবন-চালিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য" জোয়েল মোকির, ফিলিপ আগিয়োঁ এবং পিটার হাউইট ২০২৫ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়,"বিজয়ীরা আমাদের শিখিয়েছেন যে টেকসই প্রবৃদ্ধিকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না। প্রবৃদ্ধি নয়, অর্থনৈতিক স্থবিরতা মানব ইতিহাসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আদর্শ। তাদের কাজ দেখায় যে আমাদের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির হুমকি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে।"
জোয়েল ময়কার ঐতিহাসিক দলিলের মাধ্যমে খুঁজে দেখেছেন, কীভাবে টেকসই প্রবৃদ্ধি মানবসমাজে ‘নিউ নরমাল বা নয়া স্বাভাবিক’ অবস্থা হয়ে উঠল। তিনি দেখিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন ঘটতে হলে কেবল কোনো কিছু কার্যকর, তা জানাই যথেষ্ট নয়, বরং কেন তা কার্যকর—তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও জানা জরুরি। শিল্পবিপ্লবের আগে এই বৈজ্ঞানিক বোঝাপড়ার অভাবের কারণে নতুন আবিষ্কারগুলোর ওপর ভিত্তি করে অগ্রসর হওয়া কঠিন ছিল। পাশাপাশি সমাজের নতুন ধারণার প্রতি উন্মুক্ততা ও পরিবর্তনকে স্বাগত জানানোর গুরুত্বও তিনি তুলে ধরেছেন।
ফিলিপ এজিওঁ ও পিটার হাউইটও টেকসই প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করেছেন। ১৯৯২ সালে তাঁরা তৈরি করেন এক গাণিতিক মডেল, যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয় ‘creative destruction’ বা ‘সৃষ্টিশীল বিনাশ’প্রক্রিয়াকে। অর্থাৎ, যখন কোনো নতুন ও উন্নত পণ্য বাজারে আসে, তখন পুরোনো পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় হার মানে। নতুন উদ্ভাবন তাই যেমন সৃষ্টিশীল, তেমনি ধ্বংসাত্মকও—কারণ, এটি পুরোনো প্রযুক্তিকে অচল করে দেয়।
নোবেল কমিটির সদস্য জন হ্যাসলার বলেন,“জোয়েল মোকির প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উপর ভিত্তি করে টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি চিহ্নিত করার জন্য ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করেছেন,”।
“ফিলিপ আগিয়োঁ এবং পিটার হাউইট সৃজনশীল ধ্বংসের একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন, একটি অন্তহীন প্রক্রিয়া যেখানে নতুন এবং উন্নত পণ্যগুলি পুরানোকে প্রতিস্থাপন করে।”
উল্লেখ্য, মোকিরকে অর্ধেক পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে, বাকি অর্ধেক আগিয়োঁএবং হাউইটের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। নোবেলের মূল্য ১ কোটি ১০ লক্ষ সুইডিশ ক্রাউন (১.২ মিলিয়ন ডলার)। এবছর চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, শান্তি এবং সাহিত্যের পর সবশের্ষ অর্থনীতেতে নোবেল ঘোষণা করা হয়েছে।


অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ জন