আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ

ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়ে ভারতীয় অর্থনীতির যে চিত্র সামনে এলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়ে ভারতীয় অর্থনীতির যে চিত্র সামনে এলো
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বৃহত্তম বিমান পরিচালনাকারী সংস্থা ইন্ডিগো। প্রতিদিন বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে দুই হাজার ৭০০ ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান সংস্থাটি। গত নভেম্বরে ফ্লাইট ক্রুদের আরো বেশি বিশ্রামের সুযোগ দিয়ে নতুন একটি নিয়ম কার্যকর হয়, তখন থেকেই সংস্থাটির ফ্লাইট পরিচালনা বিপর্যয় শুরু হয়। গত সপ্তাহে তা পুরোপুরিই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ইন্ডিগো একদিনেই এক হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করে।

বিমান সংস্থাটির এ কার্যক্রম তদন্তের জন্য ভারতীয় সরকার তদন্তের আদেশ দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে একটি কোম্পানির বিপর্যয় ভারতের পুরো বিমান পরিচালনা ক্ষেত্রকে অচল করে দিল?

বিজ্ঞাপন

এর অর্থ লুকিয়ে আছে প্রতিযোগিতা-স্বল্পতার মধ্যে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটির সাফল্য হলো, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারের ৬৪ শতাংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেয়। এয়ার ইন্ডিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরো ২৫ শতাংশ।

বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রতিযোগিতার অভাবে বিশাল অংশের মালিকানা অল্প কিছু লোকের হাতেই শুধু রয়ে গেছে। এটি ক্রমেই ভারতে সাধারণ নিয়ম হয়ে দাঁড়াচ্ছে। টেলিকমিউনিকেশন ও ই-কমার্স থেকে শুরু করে বন্দর ও ইস্পাতশিল্পের মতো বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বিশালাকারের কিছুসংখ্যক কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করে।

ইন্ডিগো ম্যানেজমেন্ট ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। প্রতিকূল আবহাওয়া ও ফ্লাইটের সফটওয়্যার আপডেটসহ বিভিন্ন কারণে এ বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানায় তারা। ফ্লাইট বিপর্যয়ের ফলে দেশটির বিভিন্ন এয়ারপোর্টে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর ফলে সরকার নতুন নিরাপত্তার বিধান সাময়িকভাবে স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

গত সোমবার ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী কে রাম মোহন নাইডু পার্লামেন্টে ভাষণে বলেন, ‘যত বড়ই হোক, কোনো বিমান সংস্থার এ ধরনের পরিকল্পনার ত্রুটির কারণে যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলার অধিকার থাকতে পারে না।’ এর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

ইন্ডিগোর জন্য প্রতিকূল এই অবস্থা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশটির বৃহত্তর চিত্র তুলে ধরেছে। দেশটিতে বড় কোম্পানিগুলো নিষ্ঠুর যোগ্যতায় ছোট উদ্যোক্তাদের বাজারছাড়া করছে। ভারতের অর্থনৈতিক লাভজনক বিমানবন্দরগুলো মাত্র দুটি কোম্পানি পরিচালনা করে এবং ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেল অপর দুটি কোম্পানি পরিশোধন করে।

নয়াদিল্লির ওপি জিনদাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোহিত জ্যোতিষ জানান, এর ফলে বাজারের ঝুঁকি আরো বেশি বেড়ে গেছে।

এছাড়া নতুন কোম্পানিগুলোর বাজারে প্রবেশে বড় বাধা রয়েছে। ব্যাঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিকো দাশগুপ্ত বলেন, ‘কোম্পানির বিশালতা আপনাকে সফল হতে বড় সুযোগ দেবে।’

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন