• facebook
  • fb_group
  • twitter
  • tiktok
  • whatsapp
  • pinterest
  • youtube
  • linkedin
  • instagram
  • google
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
বাণিজ্য
সারা দেশ
বিশ্ব
খেলা
আইন-আদালত
ধর্ম ও ইসলাম
বিনোদন
ফিচার
আমার দেশ পরিবার
ইপেপার
আমার দেশযোগাযোগশর্তাবলি ও নীতিমালাগোপনীয়তা নীতিডিএমসিএ
facebookfb_grouptwittertiktokwhatsapppinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার দেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক, মাহমুদুর রহমান 
মাহমুদুর রহমান কর্তৃক ঢাকা ট্রেড সেন্টার (৮ম ফ্লোর), ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫ থেকে প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন লিমিটেড প্রেস, ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ: ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।ফোন: ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল: info@dailyamardesh.comবার্তা: ফোন: ০৯৬৬৬-৭৪৭৪০০। ই-মেইল: news@dailyamardesh.comবিজ্ঞাপন: ফোন: +৮৮০-১৭১৫-০২৫৪৩৪ । ই-মেইল: ad@dailyamardesh.comসার্কুলেশন: ফোন: +৮৮০-০১৮১৯-৮৭৮৬৮৭ । ই-মেইল: circulation@dailyamardesh.com
ওয়েব মেইল
কনভার্টারআর্কাইভবিজ্ঞাপনসাইটম্যাপ
> আমার দেশ স্পেশাল

শ্যামল দত্তের অ্যাকাউন্টে ১০৪২ কোটি টাকার লেনদেন

রোহান রাজিব
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ৩১
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭: ১৭
logo
শ্যামল দত্তের অ্যাকাউন্টে ১০৪২ কোটি টাকার লেনদেন

রোহান রাজিব

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ৩১

দেশের ২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৩৮ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক হিসাবগুলোতে বর্তমানে ৩০ কোটি টাকা জমা রয়েছে। এসব সাংবাদিকের মধ্যে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কারাবন্দি শ্যামল দত্তের ২৩টি ব্যাংক হিসাবে এক হাজার ৪২ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয় দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার ব্যাংক হিসাবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর ২৮ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটটের কাছে (বিএফআইইউ) চেয়ে চিঠি দিয়েছিল তথ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিএফআইইউ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়কে তাদের মধ্যে ২৪ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রদান করা হয়। তাদের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, শ্যামল দত্তের হিসাবে শুরু থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তার হিসাবগুলো থেকে এক হাজার ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ২১ কোটি ১১ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে শ্যামল দত্তকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। বর্তমানে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার ব্যাংক হিসাবে। তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৫৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়। তার মধ্যে ৫৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কালবেলার সম্পাদকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সমকালের সাবেক সম্পাদক আলমগীর হোসেনের নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে ৩১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন জমা রয়েছে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

বৈশাখী টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ অশোক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবেও বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ২৪ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকে প্রায় পুরোটাই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা। বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীরের ৫৭ ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা করা হয়। এসব হিসাব থেকে ১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা আছে এক কোটি ১০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক নঈম নিজামের ২২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব হিসাব থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখনো তার হিসাবগুলোতে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা রয়েছে।

নঈম নিজামের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের ১৭টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। তার হিসাবগুলোতে ১০ কোটি টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে স্থিতি ৫৮ লাখ টাকা রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত ফরিদা ইয়াসমিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়া ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৭ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায় ডিবিসি নিউজের সাবেক হেড অব নিউজ জায়েদুল হাসান পিন্টুর ৪২টি ব্যাংক হিসাবে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহেদুল আহসান পিন্টু আমার দেশকে বলেন, এই পরিমাণ অর্থ আমার ব্যাংকে লেনদেন হওয়া একেবারেই অসম্ভব। কোথাও একটা ভুল হয়েছে। হয়তো অন্য কারো লেনদেন আমার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। এটাকে আমার কাছে আজগুবি মনে হচ্ছে। ২০০১ সাল থেকে আমি আয়কর রিটার্ন জমা দিই। আমার সব তথ্য সেখানে প্রদর্শন করা আছে। আমার ৫টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাতে শুরু থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়ার কথা নয়। আর ব্যাংকে যে পরিমাণ টাকা জমার কথা বলা হয়েছে, সেটাও কোনোভাবে সম্ভব নয়।

দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক সাংবাদিক ফরাজী আজমল হোসেনের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার জমা করা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।

ইত্তেফাকের আরেক সাবেক সাংবাদিক শ্যামল সরকারের ১৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। হিসাবগুলোতে ২৫ লাখ টাকা এখনও জমা আছে।

সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মধুসূদন মণ্ডলের ব্যাংক হিসাবে ৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর প্রায় পুরোটাই তুলে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এ তথ্যটি সঠিক নয়। এত টাকা আমি কোথায় পাব? আমার ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি থেকে সোয়া দুই কোটি টাকার লেনদেন হতে পারে। আমার ব্যাংক হিসাব কিছুদিনের জন্য জব্দ করা হয়েছিল। তারা যাচাই-বাছাই করে ইতোমধ্যে ছেড়েও দিয়েছে।

এটিএন বাংলার জহিরুল ইসলাম মামুনের (জ ই মামুন) ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা জমা হয়। এরই মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদের ৩টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতনের ৭টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার ও বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদের দুটি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা জমা হয়। এসব হিসাব থেকে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমালের ৪টি ব্যাংক হিসাবে মিলেছে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, এই আয় অবশ্যই অস্বাভাবিক। বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গত ১৫ বছরে অন্য অনেক পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশাও কর্তৃত্ববাদের দোসর হয়ে কাজ করেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের হয়ে কাজ না করার কারণে পেশাগত দেউলিয়ায় পরিণত হয়েছে। অনৈতিক প্রমাণসাপেক্ষে যাথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে সব পেশা দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব সাংবাদিক ছাড়াও আরো অনেক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তবে অনেকের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মাহমুদুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত এবং আল-ফালাহ প্রিন্টিং প্রেস, ৪২৩, এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭ থেকে এবং অস্থায়ীভাবে মিডিয়া প্রিন্টার্স লি. ৪৪৬/এইচ, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ : ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম এভিণিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্স : ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল : info@dailyamardesh.com

দেশের ২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৩৮ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক হিসাবগুলোতে বর্তমানে ৩০ কোটি টাকা জমা রয়েছে। এসব সাংবাদিকের মধ্যে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কারাবন্দি শ্যামল দত্তের ২৩টি ব্যাংক হিসাবে এক হাজার ৪২ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয় দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার ব্যাংক হিসাবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর ২৮ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটটের কাছে (বিএফআইইউ) চেয়ে চিঠি দিয়েছিল তথ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিএফআইইউ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়কে তাদের মধ্যে ২৪ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রদান করা হয়। তাদের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, শ্যামল দত্তের হিসাবে শুরু থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তার হিসাবগুলো থেকে এক হাজার ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ২১ কোটি ১১ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে শ্যামল দত্তকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। বর্তমানে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মার ব্যাংক হিসাবে। তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৫৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়। তার মধ্যে ৫৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কালবেলার সম্পাদকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সমকালের সাবেক সম্পাদক আলমগীর হোসেনের নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে ৩১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন জমা রয়েছে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

বৈশাখী টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ অশোক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবেও বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ২৪ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকে প্রায় পুরোটাই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা। বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীরের ৫৭ ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা করা হয়। এসব হিসাব থেকে ১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে জমা আছে এক কোটি ১০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক নঈম নিজামের ২২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব হিসাব থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখনো তার হিসাবগুলোতে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা রয়েছে।

নঈম নিজামের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের ১৭টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। তার হিসাবগুলোতে ১০ কোটি টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে স্থিতি ৫৮ লাখ টাকা রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত ফরিদা ইয়াসমিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

এছাড়া ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৭ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায় ডিবিসি নিউজের সাবেক হেড অব নিউজ জায়েদুল হাসান পিন্টুর ৪২টি ব্যাংক হিসাবে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহেদুল আহসান পিন্টু আমার দেশকে বলেন, এই পরিমাণ অর্থ আমার ব্যাংকে লেনদেন হওয়া একেবারেই অসম্ভব। কোথাও একটা ভুল হয়েছে। হয়তো অন্য কারো লেনদেন আমার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। এটাকে আমার কাছে আজগুবি মনে হচ্ছে। ২০০১ সাল থেকে আমি আয়কর রিটার্ন জমা দিই। আমার সব তথ্য সেখানে প্রদর্শন করা আছে। আমার ৫টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাতে শুরু থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়ার কথা নয়। আর ব্যাংকে যে পরিমাণ টাকা জমার কথা বলা হয়েছে, সেটাও কোনোভাবে সম্ভব নয়।

দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক সাংবাদিক ফরাজী আজমল হোসেনের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার জমা করা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।

ইত্তেফাকের আরেক সাবেক সাংবাদিক শ্যামল সরকারের ১৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। হিসাবগুলোতে ২৫ লাখ টাকা এখনও জমা আছে।

সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মধুসূদন মণ্ডলের ব্যাংক হিসাবে ৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর প্রায় পুরোটাই তুলে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এ তথ্যটি সঠিক নয়। এত টাকা আমি কোথায় পাব? আমার ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি থেকে সোয়া দুই কোটি টাকার লেনদেন হতে পারে। আমার ব্যাংক হিসাব কিছুদিনের জন্য জব্দ করা হয়েছিল। তারা যাচাই-বাছাই করে ইতোমধ্যে ছেড়েও দিয়েছে।

এটিএন বাংলার জহিরুল ইসলাম মামুনের (জ ই মামুন) ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা জমা হয়। এরই মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদের ৩টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব হিসাব থেকে ৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতনের ৭টি ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার ও বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদের দুটি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা জমা হয়। এসব হিসাব থেকে ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমালের ৪টি ব্যাংক হিসাবে মিলেছে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, এই আয় অবশ্যই অস্বাভাবিক। বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গত ১৫ বছরে অন্য অনেক পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশাও কর্তৃত্ববাদের দোসর হয়ে কাজ করেছে। রাষ্ট্র ও জনগণের হয়ে কাজ না করার কারণে পেশাগত দেউলিয়ায় পরিণত হয়েছে। অনৈতিক প্রমাণসাপেক্ষে যাথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে সব পেশা দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব সাংবাদিক ছাড়াও আরো অনেক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তবে অনেকের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

ব্যাংকদুর্নীতিসাংবাদিক
সর্বশেষ
১

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে কুড়িগ্রামে মিষ্টি বিতরণ

২

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে: খেলাফত আন্দোলন

৩

শেখ হাসিনার রায়ের পর শোকরানা নামাজ আদায়

৪

মৃত্যুদণ্ড রায়ের পর যা বললেন কামাল

৫

হাসিনার ফাঁসির রায়ে হবিগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার হিড়িক

রাতের ভোটের অন্যতম কারিগর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি তিনি এক বছর আগেই নেওয়া শুরু করেন। ওই বছরের জানুয়ারিতে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বিরোধীদের দমনের অঙ্গীকার করেন।

১৩ ঘণ্টা আগে

‘টিম জাবেদের’ নির্দেশনায় আগের রাতে বাক্স ভর্তি

পুলিশ সদর দপ্তরের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কপোতাক্ষ’ নামে একটি কক্ষ আছে। এটি সাধারণ অফিসরুম হলেও ২০১৮ সালের অক্টোবরে ব্যবহার করা হয় অস্বাভাবিক কাজে। সেখানে বসে একদল পুলিশ কর্মকর্তা তৈরি করে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও পরিকল্পিত ‘ভোট ডাকাতির’ নীলনকশা।

২ দিন আগে

উপদেষ্টাদের এপিএস-পিওদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে ভাটা

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পিও তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে চলতি বছরের শুরুর দিকে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেন অনেকেই।

৩ দিন আগে

চসিকের উদ্যোগে ১৫ ভবন ভাঙার পরিকল্পনা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে প্রস্তাবিত এলাকার একটি বড় অংশকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। রায়ে বলা হয়, ১৯২০ সালের একটি রেজিস্ট্রিকৃত বিক্রয় দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তিটি চার বিগ্রহের (দেবতা) নামে হস্তান্তর করা হয়েছিল। আদালত বলে, দেবতার পক্ষে তার সেবায়েত হরলাল রায় মূল

৩ দিন আগে
বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার হিড়িক

বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার হিড়িক

‘টিম জাবেদের’ নির্দেশনায় আগের রাতে বাক্স ভর্তি

‘টিম জাবেদের’ নির্দেশনায় আগের রাতে বাক্স ভর্তি

উপদেষ্টাদের এপিএস-পিওদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে ভাটা

উপদেষ্টাদের এপিএস-পিওদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে ভাটা

চসিকের উদ্যোগে ১৫ ভবন ভাঙার পরিকল্পনা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

চসিকের উদ্যোগে ১৫ ভবন ভাঙার পরিকল্পনা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা