চট্টগ্রামে এক বছরে গুলিতে ৭ খুন, শহরজুড়ে আতঙ্ক

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে গত এক বছরে অন্তত ৭ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি হত্যাই ঘটেছে জনবহুল এলাকায়, দিনের আলোয়। হত্যার পর লাশ উদ্ধারে আসে পুলিশ, কিন্তু কোনো ঘটনাতেই ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে এক ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির মুখে পুলিশ সদস্যরাই পালিয়ে যান। যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শহরজুড়ে।
সবশেষ বুধবার বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকার পাড়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন, এসময় তার সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন। আরেক সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এরমধ্যে ছোট সাজ্জাদ স্ত্রীসহ কারাগারে আছেন। সেখান থেকেই অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
চট্টগ্রামে খুনাখুনি শুরু হয় গত বছর আগস্ট থেকে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ তার প্রতিপক্ষ মো. আনিস ও কায়সারকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার অনন্যা আবাসিক এলাকায় গুলি করে খুন করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চাঁদা না পেয়ে অক্সিজেন কালারপুল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। প্রকাশ্য গুলি করা সাজ্জাদকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে পুলিশ। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের গুলি করে পাশের ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যান সাজ্জাদ। গুলিতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজন।
তারপর চলতি বছরের ২৯ মার্চ। ওইদিন দিনগত রাত দুইটার দিকে বাকলিয়া থানার এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেটকারে এলোপাতাড়ি গুলি করে মো. আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও মো. বখতিয়ার হোসেন ওরফে মানিক নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের গ্রুপের। পরে নিহত মোহাম্মদ মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওইদিন সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় মোটরসাইকেলে আসেন চার-পাঁচজন যুবক। তারা প্রাইভেটকারটিকে গুলি করছিলেন। ঠিক একটু দূরে ছিল পুলিশের একটি টহল গাড়ি। গোলাগুলি চলার সময় পুলিশের গাড়িটি দ্রুত সটকে পড়েন।
নিহতদের স্বজন ও আহতরা জানান, কর্ণফুলী নদীর বালুমহাল নিয়ে বিরোধের পাশাপাশি ছোট সাজ্জাদকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার জন্যও এ হত্যাকাণ্ড। ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ার পেছনে সারোয়ার বাবলা ও আবদুল্লাহকে সন্দেহ করে আসছিল ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা। সন্দেহের জেরে এ ঘটনা ঘটায় তারা।
২৩ মে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে সন্ত্রাসী আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায়ও উঠে আসে সাজ্জাদের বাহিনীর নাম। তারপর ২৮ অক্টোবর নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় স্বৈরাচারের দোসরদের পোস্টার সরাতে বলায় গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ হোসেন (২৩)। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। নিহত সাজ্জাদ (২৩) মহানগর যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা এমদাদুল হক বাশার গ্রুপের কর্মী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি চললেও পুলিশ আসেনি। ঘটনা থামার পর পুলিশ আসে। বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকার আবুল কাশেম নামে এক দোকানি বলেছিলেন, রাত তখন ২টা। হঠাৎ দেখি কয়েকটা মোটরসাইকেল। মারামারি। কয়েকজন সাজ্জাদের সঙ্গে কথা বলে। হঠাৎ একটা ‘টিক’ শব্দ, তারপর দেখি ও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আমরা ভেবেছিলাম পাথর পড়েছে। পরে দেখি বুকে গুলির চিহ্ন। দুই ঘণ্টা গোলাগুলির পর আসে পুলিশ।
বাকলিয়ার এক্সেস রোডের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা দিনের বেলাতেও ভয় পাই। কখন কোথায় গুলি হবে কেউ জানে না। পুলিশের গাড়ি আসে, লাশ তুলে নিয়ে যায়-তারপর সব চুপ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা প্রথমে আশ্রয় নেন এক দোকানে, পরে পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে চলে যান। কয়েক মিনিট পরই নিহতের লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অস্ত্রধারীরা এখন ভয় পায় না। তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় আছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়, তারা কয়েকদিনের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আসে।
বায়েজিদের স্থানীয় বাসিন্দা রুবিনা আক্তার বলেন, রাত আটটার পর দরজা বন্ধ করে দেই। ছেলে বাইরে গেলে ফোনে বারবার খোঁজ নিই।
তাদের ভাষায়, চট্টগ্রাম এখন এমন শহর, যেখানে গুলি শুনে কেউ চমকে ওঠে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাস থাকলেও শহরের মানুষ বিশ্বাস হারাচ্ছে নিরাপত্তায়। গুলির শব্দ থেমে গেলেও ভয়টা রয়ে গেছে বাতাসে-এক এমন শহর, যেখানে প্রতিটি ভোর নতুন দিনের নয়, বরং নতুন আশঙ্কার সূচনা।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে ও আরও কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে। রাতে সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত হতে পারে, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে প্রাথমিক ধারণা আছে।
কমিশনারের ভাষায়, অপরাধীদের মূল টার্গেট ছিল সরোয়ার, এরশাদ উল্লাহ নয়। এই ঘটনার মূল কুশীলবদের অনেকে ইতিমধ্যে জেলে আছে। তাদের শীর্ষ একজন বর্তমানে জেলে রয়েছেন, স্ত্রীসহ। বাইরে যারা আছে, তারা প্রত্যন্ত এলাকায় লুকিয়ে থাকে। তারা মোটরসাইকেলে এসে ‘কিলিং মিশন’ চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, কিলিং মিশনে যারা অংশ নেয়, তাদের শনাক্তের মতো কিছু আলামত পুলিশের হাতে এসেছে। 'আমরা খুব দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনব,' বলেন কমিশনার।
নির্বাচনের আগে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে 'অ্যালার্মিং' (উদ্বেগজনক) বলে মন্তব্য করেন তিনি। 'আমি বলব, সামনে বিএনপি–জামায়াতসহ যেকোনো রাজনৈতিক দল জনসভা বা গণসংযোগের আগে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানাক। পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে,' বলেন হাসিব আজিজ।
তিনি আরও দাবি করেন, 'এরশাদ উল্লাহ বিকেলে গণসংযোগের আগে আমার কার্যালয়ে এসেছিলেন। তিনি আমাকে একবারও বলেননি যে চালিতাতলীতে গণসংযোগ করবেন। এমনকি বায়েজিদ থানা–পুলিশও কিছু জানত না।'
এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এরশাদ উল্লাহর পায়ে গুলি লেগেছে, তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত চলছে।

চট্টগ্রামে গত এক বছরে অন্তত ৭ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি হত্যাই ঘটেছে জনবহুল এলাকায়, দিনের আলোয়। হত্যার পর লাশ উদ্ধারে আসে পুলিশ, কিন্তু কোনো ঘটনাতেই ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে এক ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির মুখে পুলিশ সদস্যরাই পালিয়ে যান। যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শহরজুড়ে।
সবশেষ বুধবার বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকার পাড়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন, এসময় তার সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন। আরেক সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের অনুসারী রায়হান গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এরমধ্যে ছোট সাজ্জাদ স্ত্রীসহ কারাগারে আছেন। সেখান থেকেই অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
চট্টগ্রামে খুনাখুনি শুরু হয় গত বছর আগস্ট থেকে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ তার প্রতিপক্ষ মো. আনিস ও কায়সারকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার অনন্যা আবাসিক এলাকায় গুলি করে খুন করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চাঁদা না পেয়ে অক্সিজেন কালারপুল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। প্রকাশ্য গুলি করা সাজ্জাদকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে পুলিশ। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের গুলি করে পাশের ভবনের ছাদে উঠে পালিয়ে যান সাজ্জাদ। গুলিতে আহত হন দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজন।
তারপর চলতি বছরের ২৯ মার্চ। ওইদিন দিনগত রাত দুইটার দিকে বাকলিয়া থানার এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেটকারে এলোপাতাড়ি গুলি করে মো. আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও মো. বখতিয়ার হোসেন ওরফে মানিক নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের গ্রুপের। পরে নিহত মোহাম্মদ মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওইদিন সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় মোটরসাইকেলে আসেন চার-পাঁচজন যুবক। তারা প্রাইভেটকারটিকে গুলি করছিলেন। ঠিক একটু দূরে ছিল পুলিশের একটি টহল গাড়ি। গোলাগুলি চলার সময় পুলিশের গাড়িটি দ্রুত সটকে পড়েন।
নিহতদের স্বজন ও আহতরা জানান, কর্ণফুলী নদীর বালুমহাল নিয়ে বিরোধের পাশাপাশি ছোট সাজ্জাদকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার জন্যও এ হত্যাকাণ্ড। ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেয়ার পেছনে সারোয়ার বাবলা ও আবদুল্লাহকে সন্দেহ করে আসছিল ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা। সন্দেহের জেরে এ ঘটনা ঘটায় তারা।
২৩ মে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে সন্ত্রাসী আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায়ও উঠে আসে সাজ্জাদের বাহিনীর নাম। তারপর ২৮ অক্টোবর নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় স্বৈরাচারের দোসরদের পোস্টার সরাতে বলায় গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ হোসেন (২৩)। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। নিহত সাজ্জাদ (২৩) মহানগর যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা এমদাদুল হক বাশার গ্রুপের কর্মী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি চললেও পুলিশ আসেনি। ঘটনা থামার পর পুলিশ আসে। বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকার আবুল কাশেম নামে এক দোকানি বলেছিলেন, রাত তখন ২টা। হঠাৎ দেখি কয়েকটা মোটরসাইকেল। মারামারি। কয়েকজন সাজ্জাদের সঙ্গে কথা বলে। হঠাৎ একটা ‘টিক’ শব্দ, তারপর দেখি ও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আমরা ভেবেছিলাম পাথর পড়েছে। পরে দেখি বুকে গুলির চিহ্ন। দুই ঘণ্টা গোলাগুলির পর আসে পুলিশ।
বাকলিয়ার এক্সেস রোডের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা দিনের বেলাতেও ভয় পাই। কখন কোথায় গুলি হবে কেউ জানে না। পুলিশের গাড়ি আসে, লাশ তুলে নিয়ে যায়-তারপর সব চুপ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা প্রথমে আশ্রয় নেন এক দোকানে, পরে পুরোপুরি এলাকা ছেড়ে চলে যান। কয়েক মিনিট পরই নিহতের লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অস্ত্রধারীরা এখন ভয় পায় না। তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় আছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়, তারা কয়েকদিনের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আসে।
বায়েজিদের স্থানীয় বাসিন্দা রুবিনা আক্তার বলেন, রাত আটটার পর দরজা বন্ধ করে দেই। ছেলে বাইরে গেলে ফোনে বারবার খোঁজ নিই।
তাদের ভাষায়, চট্টগ্রাম এখন এমন শহর, যেখানে গুলি শুনে কেউ চমকে ওঠে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাস থাকলেও শহরের মানুষ বিশ্বাস হারাচ্ছে নিরাপত্তায়। গুলির শব্দ থেমে গেলেও ভয়টা রয়ে গেছে বাতাসে-এক এমন শহর, যেখানে প্রতিটি ভোর নতুন দিনের নয়, বরং নতুন আশঙ্কার সূচনা।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে ও আরও কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে। রাতে সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত হতে পারে, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে প্রাথমিক ধারণা আছে।
কমিশনারের ভাষায়, অপরাধীদের মূল টার্গেট ছিল সরোয়ার, এরশাদ উল্লাহ নয়। এই ঘটনার মূল কুশীলবদের অনেকে ইতিমধ্যে জেলে আছে। তাদের শীর্ষ একজন বর্তমানে জেলে রয়েছেন, স্ত্রীসহ। বাইরে যারা আছে, তারা প্রত্যন্ত এলাকায় লুকিয়ে থাকে। তারা মোটরসাইকেলে এসে ‘কিলিং মিশন’ চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, কিলিং মিশনে যারা অংশ নেয়, তাদের শনাক্তের মতো কিছু আলামত পুলিশের হাতে এসেছে। 'আমরা খুব দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনব,' বলেন কমিশনার।
নির্বাচনের আগে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে 'অ্যালার্মিং' (উদ্বেগজনক) বলে মন্তব্য করেন তিনি। 'আমি বলব, সামনে বিএনপি–জামায়াতসহ যেকোনো রাজনৈতিক দল জনসভা বা গণসংযোগের আগে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানাক। পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে,' বলেন হাসিব আজিজ।
তিনি আরও দাবি করেন, 'এরশাদ উল্লাহ বিকেলে গণসংযোগের আগে আমার কার্যালয়ে এসেছিলেন। তিনি আমাকে একবারও বলেননি যে চালিতাতলীতে গণসংযোগ করবেন। এমনকি বায়েজিদ থানা–পুলিশও কিছু জানত না।'
এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এরশাদ উল্লাহর পায়ে গুলি লেগেছে, তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত চলছে।

চট্টগ্রামের ছোট সাজ্জাদ এখন এক অদ্ভুত অবস্থানের নাম। জেলখানায় বন্দি, কিন্তু বাহিরের পুরো অপারেশন চলছে তার নির্দেশে। কেউ কেউ একে বলেন, 'রিমোট কন্ট্রোল রাজত্ব'। যেখানে জেলের ভেতর থেকেই সাজ্জাদ ঠিক করেন কে কোথায় যাবে, কার বিরুদ্ধে অ্যাকশন হবে, এমনকি কোন এলাকায় কবে মুভ করবে তার বাহিনী।
১ ঘণ্টা আগে
ভোলার চরফ্যাশনে প্রয়োজন সমবায় সমিতির গ্রাহকবৃন্দতে মব সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
আবারও রক্তে ভিজলো চট্টগ্রামের রাউজান। বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া চৌধুরী পাড়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপির কর্মী পাঁচ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমকর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হতে বলে জানিয়েছেন তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর।
৪ ঘণ্টা আগে