বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের জনসাধারণের উদ্যোগে নির্মিত কাঠ ও বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন হাজারো মানুষ। আমতলীতে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত সাঁকোই ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
জানা গেছে, হলদিয়া খালের ওপর ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের আয়রন সেতুটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করায় ২০২৪ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি একটি মাইক্রোবাসসহ ভেঙে খালে পড়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে থাকা ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৯ জন যাত্রী মারা যায়।
দীর্ঘ দুই মাস ধরে এলাকার জনসাধারণ তিনগুণ পথ পাড়ি দিয়ে আমতলী উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করত। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল আহম্মেদ খান ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব নান্নু মোল্লা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরির উদ্যোগ নেন।
স্থানীয় জনসাধারণ ও সাঁকো নির্মাণের জন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে নির্মিত সাঁকোতে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না, শুধু জনসাধারণ চলাচল করছেন। হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুরা, পূর্ব চিলা, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া, হলদিয়া গ্রামের জনসাধারণ কাঠের তৈরি সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন।
হলদিয়া খালের ওপাড়ে রয়েছে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া দাখিল মাদরাসা, গুরুদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক জানান, আমতলী সদরের সঙ্গে হলদিয়া ইউনিয়নের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পথ হল হলদিয়া সেতুটি। অচিরেই সেতুর কাজ শুরু করার দাবি জানাই। একটি মাত্র সেতু চালু রয়েছে হলদিয়া ইউনিয়নে। সেই সেতুটির অবস্থা ততটা ভালো নয়। যদি কোনো কারণে যানবাহন চলাচলে সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে তাহলে আমতলীর সঙ্গে হলদিয়াবাসীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
হলদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মামুন মিয়া জানান, স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে যদি সাঁকো নির্মাণ না করা হতো তাহলে আমাদের তিনগুণ পথ পাড়ি দিয়ে অফিসে যাতায়াত করতে হতো । তাই জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি।
কৃষক মো. নাসির মৃধা বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে সেতুটি ভেঙে যায়। এলাকার লোকজন মিলে নিজেদের খরচে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছি । অতিবৃষ্টিতে কাঠ ও বাঁশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী আমার দেশকে বলেন, ‘প্রায় ১৯ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশাকরি আগামী দুই থেকে তিন মাসের ভেতরে দরপত্র আহ্বান করা হবে । যাতে দ্রুত কাজ হয়, সে ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।

