চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৪২ বছর ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে পত্রিকা নিয়ে ছুটে চলেছেন অজতি কৃষ্ণ দাশ। এ কারণে সবার কাছেই তিনি পরিচিত । সূর্যের আলো ফোটার আগেই রাউজান উপজেলার বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ভোরে সবার হাতে পৌঁছে দেন প্রতিদিনের খবরের কাগজ । ভাঙ্গা একটি বাইসাইকেলে করে দোকানে, মানুষের বাড়ি, ঘর, স্কুল, মাদরাসা, ব্যাংক, অফিসে পৌঁছে দেন পত্রিকা। বছরের কয়েকটা দিন ছাড়া ছুটি নেই তার। এভাবে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে চলে বছরের পর বছর।
৫৭ বছর বয়সে পাঠকের ভালোবাসায় আর জীবিকার তাগিদে পেপার বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অজতি কৃষ্ণ জানান সাত বছর চট্টগ্রামে ও হাটহাজারীতে ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত পত্রিকা বিলি করে আসছেন। প্রায় ৪২ বছর আগে থেকেই তিনি মূলত এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। সাইকেলে করে পত্রিকা বিক্রি শুরু করেন। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় বা কনকনে শীত, যাই থাকুক না কেন সেই কাকডাকা ভোরে বেরিয়ে পড়েন। পাঠকের দ্বারে দ্বারে পত্রিকা পৌঁছে দেন। একমাত্র আয় পত্রিকা বিক্রি থেকে উপার্জিত অর্থ। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে চারজনের সংসার। পত্রিকা বিক্রি করে সংসার চলে তার। এর মধ্যে পত্রিকা বিক্রি করে এবং ছেলে মেয়ে দুইজন টিউশনি করে তারা সুশিক্ষিত হয়েছে।
অজতি কৃষ্ণ দাশ জানান, একসময় বিভিন্ন পত্রিকার হেড অফিস থেকে আমাদের জন্য ছাতা, কলম, ব্যাগসহ বিভিন্ন উপকরণ আসত। এখন আর কিছুই আসে না। তবু কোনো সহায়সম্বল না থাকায় অন্য কোনো পেশায় না যাওয়ার চিন্তাই বেশি।
দিন দিন পত্রিকার পাঠক কমে যাচ্ছে বলে জানান, অজতি কৃষ্ণ দাশ (পিংকির বাপ)। তিনি বলেন, আমরা বেকায়দায় আছি। নেই তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা। হকারদের যদি কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা সরকারি বা বেসরকারিভাবে করা হতো তাহলে আমরা একটু ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম। তাই সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে পত্রিকা বিক্রির পেশা ধরে রাখতে একটি সাইকেল ও আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
অজতি কৃষ্ণ দাশ বিষয়ে প্রবীণ মুরুব্বি ডা. নুরুল হক বলেন, অজতি কৃষ্ণ দাশ যে সময়ে পত্রিকার হকার হিসেবে পেশা শুরু করেছিলেন, তখন মানুষ পত্রিকা পড়তে আগ্রহী ছিল গড়দুয়ারা ও মেখল এলাকার সাধারণ মানুষ। বর্তমানে অনলাইনের যুগে ছাপা পত্রিকার একটু কদর কমেছে। মানুষ এখন হাতে থাকা মুঠোফোনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের খবরাখবর জানতে পারছে।


সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ আ. লীগ নেতার