
জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থীর গণসংযোগে গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। দায়ের হয়নি মামলাও। এরই মধ্যে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে ফের সামনে এসেছে প্রবাসে থাকা সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ ও কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের নাম। তাদের নির্দেশেই ধানের শীষের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর কর্মসূচিতে হামলা হয় বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গণসংযোগে গুলি চালিয়ে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলাকে হত্যা করে দুই সাজ্জাদের সহযোগীরা। গত এক বছরে এভাবে অন্তত সাতটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা। একজন দেশের বাইরে থেকে এবং অন্যজনের জেল থেকে চালানো এ অপারেশনকে ‘রিমোট কন্ট্রোল’ রাজত্ব হিসেবে অভিহিত করছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, কারাগারে বসেই ছোট সাজ্জাদ ‘টার্গেট লিস্ট’ তৈরি করে পাঠায় তার আস্থাভাজন রুবেল, সোহেল ও রায়হানের কাছে। সবশেষ গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়ায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি প্রচারে হামলা চালাতেও এমন নির্দেশনা পাঠিয়েছিল সাজ্জাদ, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল রায়হানের ওপর। তার নেতৃত্বেই জনসমাগমের ভেতরে মিশে একবারে কাছ থেকে মাথার পেছনে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় বাবলাকে।
পুলিশের দাবি, দুই সাজ্জাদের সহযোগীরা থাকে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। নির্দেশনা এলে সেখান থেকে এসে অপারেশন চালিয়ে ফের ফিরে যায় গহিন পাহাড়ে। বাবলার আগে গত আট মাসে অন্তত পাঁচটি হত্যাকাণ্ড ও সাতটি হামলার ঘটনায় সাজ্জাদ গ্রুপের নাম এসেছে। এর মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় সরাসরি গুলি ছোড়ে তার সহযোগীরা।
জেলে থেকেও কীভাবে নির্দেশনা পায় ছোট সাজ্জাদের বাহিনীÑসে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আমার দেশ। এ বিষয়ে কথা হয় তিন পুলিশ কর্মকর্তা, এক কারা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষকের সঙ্গে।
তারা জানান, ছোট সাজ্জাদ কারাগার থেকেই একাধিক ফোন ও বার্তার মাধ্যমে তার বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে। এ নেটওয়ার্ক এতটা গোছানো যে, জেলের দেয়াল যেন আর কোনো বাধা নয় তার জন্য। মূলত জেল পুলিশ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলে সাজ্জাদের নেটওয়ার্ক।
তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ছোট সাজ্জাদের নেটওয়ার্ক তৈরি ও পরিচালনায় কয়েক কারা কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। এছাড়া তার একাধিক ‘বিশ্বস্ত লিংকম্যান’ আছে, যারা প্রতি সপ্তাহে পরিবার বা আইনজীবীর দেখাসাক্ষাতের আড়ালে তার নির্দেশগুলো বাইরে পৌঁছে দেয়। সাক্ষাৎকারে সাজ্জাদ কোডওয়ার্ড ব্যবহার করেনÑযেমন ‘চা বানাও’ মানে অপারেশন শুরু, ‘খাম পাঠাও’ মানে অর্থ পাঠানো সম্পন্ন। এ কোডগুলো সাক্ষাৎ শেষে লিংকম্যানরা বাইরে ‘ডিকোড’ করে সংশ্লিষ্ট বাহিনী বা সহযোগীদের কাছে পাঠায়।
এক তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, সাজ্জাদ খুব সাবধানি। কখনো স্পষ্ট করে কিছু বলে না। কথার মধ্যে ইঙ্গিত দেয়। তাতেই নির্দেশ বুঝে যায় তার লোকজন।
বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি না থাকায় এক কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে থাকা কয়েক কয়েদি আসলে তার ‘কর্মচারী’। ওরা ফোন লুকিয়ে রাখে, চার্জ দেয়, এমনকি কল রিসিভ করেও বাইরে বার্তা পাঠায়।
একই কারণে নাম প্রকাশ না করে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সাজ্জাদের রিমোট কন্ট্রোল সাম্রাজ্য তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও জেল প্রশাসনের দুর্নীতি; দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল যোগাযোগের কৌশল এবং তৃতীয়ত, রাজনৈতিক প্রভাবের নিরাপত্তা বলয়। সাজ্জাদ বন্দি থাকলেও তার ফোনের ওপাশেই আছে এক অদৃশ্য রাজত্ব।
বাবলার সঙ্গে সাজ্জাদের বিরোধের কারণ
বুধবার গুলিতে নিহত হওয়া সন্ত্রাসী সরওয়ার হোসেন বাবলা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১৯টি মামলা আছে। বাবলার কাছে ছোট সাজ্জাদ মূলত দুধের শিশু। আবার তারা দুজনই একই গুরুর শিষ্য। ‘আন্ডারওয়ার্ল্ডের’ ওই গুরুর নামও সাজ্জাদ। তিনি বহু বছর ধরে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাবলা ও ম্যাক্সন ছিল সাজ্জাদের ডানহাত। ২০১১ সালের জুলাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ম্যাক্সন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বায়েজিদ এলাকা থেকে দুটি একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ বাবলাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে কাতারে চলে যান দুজনই। সেখান থেকেই দেশে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ছিল পুলিশের। কাতারে মারামারির ঘটনায় এক মাস সাজাভোগের পর ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাবলাকে দেশে ফেরত পাঠায় কাতার পুলিশ। গত বছরের মঝামাঝি সময়ে জামিনে বেরিয়ে ফের রাজত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন বাবলা । কিন্তু তাদের অনুপস্থিতিতে এর আগেই উত্থান হয় ছোট সাজ্জাদের। দুবাই পালিয়ে থাকা বড় সাজ্জাদ তার রাজত্ব সামলাতে আস্থা রাখেন ছোট সাজ্জাদের ওপর।
এলাকায় ফিরে রাজত্ব ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবলা। কিন্তু ছোট সাজ্জাদের দাপটের কাছে হালে পানি পাননি তিনি। বড় সাজ্জাদের দারস্থ হলেও মেলেনি সহায়তা। এ কারণে নিজের মতো করে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টা করতে থাকেন বাবলা । রাজনৈতিক ছত্রছায়া পেতে নিজেকে বিএনপিকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন তিনি। এরই মাঝে পুলিশের ওপর হামলার একটি ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ছোট সাজ্জাদ। এজন্য দায়ী করা হয় বাবলাকে।
তখন আন্ডারওয়ার্ল্ডের গুরু বড় সাজ্জাদের নির্দেশনায় ছোট সাজ্জাদের সহযোগীরা বাবলাকে টার্গেট করে একাধিকবার হামলা চালায়। প্রতিবারই প্রাণে বেঁচে গেলেও সবশেষ বুধবার আর রেহাই মেলেনি। একেবারে পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে করা কয়েক রাউন্ড গুলিতে ঝাঁজরা হয় তার শরীর।
সন্ত্রাসী বাবলাকে দলে নেন বিএনপি নেতা
পুলিশের তথ্যমতে, সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের হাত ধরে রাজনৈতিক মঞ্চে জায়গা করে নেন সন্ত্রাসী বাবলা। কারাগার থেকে মুক্তির পর হঠাৎ করেই বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। মূলত কারাগারে থাকাকালে চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। মুক্তির পর এ সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
মাত্র এক মাস আগে বিয়ে করেন বাবলা। তার বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন এরশাদ উল্লাহ, আবু সুফিয়ানসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে তাদের পাশে দেখা গেছে বাবলাকে। বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী পূর্ব মসজিদের কাছে গণসংযোগে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বাবলা পরে হাসপাতালে মারা যান।
সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে জানিয়ে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, নিহত বাবলার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থীর গণসংযোগে গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। দায়ের হয়নি মামলাও। এরই মধ্যে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে ফের সামনে এসেছে প্রবাসে থাকা সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ ও কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের নাম। তাদের নির্দেশেই ধানের শীষের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর কর্মসূচিতে হামলা হয় বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গণসংযোগে গুলি চালিয়ে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলাকে হত্যা করে দুই সাজ্জাদের সহযোগীরা। গত এক বছরে এভাবে অন্তত সাতটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা। একজন দেশের বাইরে থেকে এবং অন্যজনের জেল থেকে চালানো এ অপারেশনকে ‘রিমোট কন্ট্রোল’ রাজত্ব হিসেবে অভিহিত করছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, কারাগারে বসেই ছোট সাজ্জাদ ‘টার্গেট লিস্ট’ তৈরি করে পাঠায় তার আস্থাভাজন রুবেল, সোহেল ও রায়হানের কাছে। সবশেষ গত বুধবার রাতে বায়েজিদ থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়ায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনি প্রচারে হামলা চালাতেও এমন নির্দেশনা পাঠিয়েছিল সাজ্জাদ, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল রায়হানের ওপর। তার নেতৃত্বেই জনসমাগমের ভেতরে মিশে একবারে কাছ থেকে মাথার পেছনে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় বাবলাকে।
পুলিশের দাবি, দুই সাজ্জাদের সহযোগীরা থাকে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। নির্দেশনা এলে সেখান থেকে এসে অপারেশন চালিয়ে ফের ফিরে যায় গহিন পাহাড়ে। বাবলার আগে গত আট মাসে অন্তত পাঁচটি হত্যাকাণ্ড ও সাতটি হামলার ঘটনায় সাজ্জাদ গ্রুপের নাম এসেছে। এর মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় সরাসরি গুলি ছোড়ে তার সহযোগীরা।
জেলে থেকেও কীভাবে নির্দেশনা পায় ছোট সাজ্জাদের বাহিনীÑসে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আমার দেশ। এ বিষয়ে কথা হয় তিন পুলিশ কর্মকর্তা, এক কারা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষকের সঙ্গে।
তারা জানান, ছোট সাজ্জাদ কারাগার থেকেই একাধিক ফোন ও বার্তার মাধ্যমে তার বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে। এ নেটওয়ার্ক এতটা গোছানো যে, জেলের দেয়াল যেন আর কোনো বাধা নয় তার জন্য। মূলত জেল পুলিশ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলে সাজ্জাদের নেটওয়ার্ক।
তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ছোট সাজ্জাদের নেটওয়ার্ক তৈরি ও পরিচালনায় কয়েক কারা কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। এছাড়া তার একাধিক ‘বিশ্বস্ত লিংকম্যান’ আছে, যারা প্রতি সপ্তাহে পরিবার বা আইনজীবীর দেখাসাক্ষাতের আড়ালে তার নির্দেশগুলো বাইরে পৌঁছে দেয়। সাক্ষাৎকারে সাজ্জাদ কোডওয়ার্ড ব্যবহার করেনÑযেমন ‘চা বানাও’ মানে অপারেশন শুরু, ‘খাম পাঠাও’ মানে অর্থ পাঠানো সম্পন্ন। এ কোডগুলো সাক্ষাৎ শেষে লিংকম্যানরা বাইরে ‘ডিকোড’ করে সংশ্লিষ্ট বাহিনী বা সহযোগীদের কাছে পাঠায়।
এক তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, সাজ্জাদ খুব সাবধানি। কখনো স্পষ্ট করে কিছু বলে না। কথার মধ্যে ইঙ্গিত দেয়। তাতেই নির্দেশ বুঝে যায় তার লোকজন।
বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি না থাকায় এক কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে থাকা কয়েক কয়েদি আসলে তার ‘কর্মচারী’। ওরা ফোন লুকিয়ে রাখে, চার্জ দেয়, এমনকি কল রিসিভ করেও বাইরে বার্তা পাঠায়।
একই কারণে নাম প্রকাশ না করে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সাজ্জাদের রিমোট কন্ট্রোল সাম্রাজ্য তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমত, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও জেল প্রশাসনের দুর্নীতি; দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল যোগাযোগের কৌশল এবং তৃতীয়ত, রাজনৈতিক প্রভাবের নিরাপত্তা বলয়। সাজ্জাদ বন্দি থাকলেও তার ফোনের ওপাশেই আছে এক অদৃশ্য রাজত্ব।
বাবলার সঙ্গে সাজ্জাদের বিরোধের কারণ
বুধবার গুলিতে নিহত হওয়া সন্ত্রাসী সরওয়ার হোসেন বাবলা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১৯টি মামলা আছে। বাবলার কাছে ছোট সাজ্জাদ মূলত দুধের শিশু। আবার তারা দুজনই একই গুরুর শিষ্য। ‘আন্ডারওয়ার্ল্ডের’ ওই গুরুর নামও সাজ্জাদ। তিনি বহু বছর ধরে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাবলা ও ম্যাক্সন ছিল সাজ্জাদের ডানহাত। ২০১১ সালের জুলাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ম্যাক্সন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বায়েজিদ এলাকা থেকে দুটি একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ বাবলাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে কাতারে চলে যান দুজনই। সেখান থেকেই দেশে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ছিল পুলিশের। কাতারে মারামারির ঘটনায় এক মাস সাজাভোগের পর ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাবলাকে দেশে ফেরত পাঠায় কাতার পুলিশ। গত বছরের মঝামাঝি সময়ে জামিনে বেরিয়ে ফের রাজত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন বাবলা । কিন্তু তাদের অনুপস্থিতিতে এর আগেই উত্থান হয় ছোট সাজ্জাদের। দুবাই পালিয়ে থাকা বড় সাজ্জাদ তার রাজত্ব সামলাতে আস্থা রাখেন ছোট সাজ্জাদের ওপর।
এলাকায় ফিরে রাজত্ব ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবলা। কিন্তু ছোট সাজ্জাদের দাপটের কাছে হালে পানি পাননি তিনি। বড় সাজ্জাদের দারস্থ হলেও মেলেনি সহায়তা। এ কারণে নিজের মতো করে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টা করতে থাকেন বাবলা । রাজনৈতিক ছত্রছায়া পেতে নিজেকে বিএনপিকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন তিনি। এরই মাঝে পুলিশের ওপর হামলার একটি ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ছোট সাজ্জাদ। এজন্য দায়ী করা হয় বাবলাকে।
তখন আন্ডারওয়ার্ল্ডের গুরু বড় সাজ্জাদের নির্দেশনায় ছোট সাজ্জাদের সহযোগীরা বাবলাকে টার্গেট করে একাধিকবার হামলা চালায়। প্রতিবারই প্রাণে বেঁচে গেলেও সবশেষ বুধবার আর রেহাই মেলেনি। একেবারে পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে করা কয়েক রাউন্ড গুলিতে ঝাঁজরা হয় তার শরীর।
সন্ত্রাসী বাবলাকে দলে নেন বিএনপি নেতা
পুলিশের তথ্যমতে, সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের হাত ধরে রাজনৈতিক মঞ্চে জায়গা করে নেন সন্ত্রাসী বাবলা। কারাগার থেকে মুক্তির পর হঠাৎ করেই বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। মূলত কারাগারে থাকাকালে চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। মুক্তির পর এ সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
মাত্র এক মাস আগে বিয়ে করেন বাবলা। তার বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন এরশাদ উল্লাহ, আবু সুফিয়ানসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে তাদের পাশে দেখা গেছে বাবলাকে। বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী পূর্ব মসজিদের কাছে গণসংযোগে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে বাবলা পরে হাসপাতালে মারা যান।
সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে জানিয়ে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, নিহত বাবলার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

‘পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য’ বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নেয়ায় উৎফুল্ল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
১ মিনিট আগে
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পাঁচথুবি ইউনিয়নে মাদক-বিরোধী অভিযানে ৫২ বোতল ফেন্সিডিলসহ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হোসেন ওরফে মীরুকে ( ৫০) গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টাস্কফোর্স দল।
১২ মিনিট আগে
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুরে অবস্থিত নর্থবেঙ্গল সুগার মিলসের ক্যাইন ক্যারিয়ার প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া শেষে কেইন ক্যারিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৫-২০২৬ আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করা হবে।
১ ঘণ্টা আগে
খুলনার রূপসায় সোহেল হাওলাদার (৪৫) নামে এক প্রবাসীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের রহিমনগর গ্রামের মানিক সরদারের বালুর মাঠের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে