আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

মীর হেলালের সম্পদ ১০ কোটি টাকার বেশি, নগদ অর্থ ৫ কোটির ওপর

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

মীর হেলালের সম্পদ ১০ কোটি টাকার বেশি, নগদ অর্থ ৫ কোটির ওপর

চট্টগ্রাম–৫ (হাটহাজারী–বায়েজিদ) আসনে বিএনপির প্রার্থী মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের ঘোষিত সম্পদ এলাকাজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জিয়াউদ্দীনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। মনোনয়ন জমার পর তার দাখিল করা হরফনামা প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে তার বিপুল অস্থাবর সম্পদের উৎস নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী। হরফনামায় তিনি কৃষিখাতে বার্ষিক আয়ের ঘরটিতে দেখিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। বাড়ি ও বাসা ভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ১৫ হাজার। শেয়ার, বন্ড, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে বার্ষিক আয় ২৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা। শিক্ষকতা, চিকিৎসা ও আইন–পরামর্শক হিসেবে তার আয় ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

কিন্তু আয়ের এই তুলনামূলক সীমিত হিসাবের বিপরীতে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ চোখে পড়ার মতো। হরফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার কাছে নগদ অর্থ আছে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। শেয়ার, বন্ড ও স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগ করা অর্থের মূল্য ৪ লাখ ৫ হাজার। স্থায়ী আমানত আছে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্র আছে ৫ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে অস্থাবর সম্পদের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি ৫২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদ মিলিয়ে সর্বমোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৫২ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

সাধারণ আইনজীবীর এমন বিপুল সম্পদের উৎস কী-এ নিয়ে প্রশ্ন হাটহাজারী–বায়েজিদ এলাকায় গতকাল বিকেল থেকেই প্রার্থীর সম্পদ নিয়ে মাঠে–ঘাটে আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বিস্ময়ের কেন্দ্রে মূলত নগদ অর্থের পরিমাণ। ৫ কোটির বেশি নগদ অর্থ রাখা কেন প্রয়োজন, সেটা নিয়ে আলাপ–আলোচনা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

হাটহাজারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক বলেন, একজন আইনজীবীর আয়ের সীমা থাকে। মীর হেলাল কোনো আইনী পেশা থেকে আয় করেন না। তার ঘোষিত আয় বড়জোর কয়েক লাখ টাকা। তাহলে মোট সম্পদ হলো ১০ কোটি টাকা। তার মধ্যে নগদই ৫ কোটির বেশি। ভোটার হিসেবে এটিই স্বাভাবিকভাবে আমাদের প্রশ্ন জাগায়।

অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীরা হরফনামায় যে তথ্য দেন, তা আইনি দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে। কিন্তু আয়ের তুলনায় সম্পদ যদি অতিমাত্রায় বেশি হয়, বিশেষ করে নগদ অর্থের পরিমাণ অস্বাভাবিক হয়, তাহলে নিয়মিতভাবে এটির অডিট বা যাচাই হওয়া উচিত। এতে প্রার্থী যেমন স্বচ্ছ হতে পারবেন, তেমনি ভোটারও সঠিক তথ্য পাবেন। তবে বাংলাদেশে কোনো সময় প্রার্থীদের কোনো সংস্থা চ্যালেঞ্জ করেনি। তাদের আয়ের উৎসের সঙ্গে হলফনামায় দেওয়া তথ্য ঠিক আছে কি-না, সেটি কেউ তদন্ত করে না।

জানতে চাইলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আমার দেশকে বলেন, আমি এখানে কোনো কিছু লুকাইনি। আমার সব আয়ের পরিমাণ ট্যাক্স ফাইলেই আছে। এছাড়া আমার বাবা একজন আইনজীবী। পারিবারিকভাবেই আমরা সম্পদশালী।

তিনি আরো বলেন, সব সম্পদের উৎস বৈধ এবং দীর্ঘ সময়ের পারিবারিক আয়ের অংশ হিসেবেই সম্পদ গড়ে উঠেছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন