অভিযানের নামে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ তানভীরের বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ‎

উপজেলা প্রতিনিধি, মহেশখালী (কক্সবাজার)
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৩

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে মহেশখালীর কালারমারছড়ার জমিদার বাড়ি খউস্বর গোষ্ঠীর তানভীর সিদ্দিকী শহীদ হন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার পরিবারকে ‘বীর নিবাস’ নামে একটি বাড়ি উপহার দেন। অভিযানের নামে সেই বাড়িতে বারবার ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন তানভীরের পরিবারের সদস্যরা। হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গীয় সোর্স হিসেবে ব্যবহার কোস্টগার্ডের বিতর্কিত অভিযানের কারণে শহীদ তানভীরের প্রায় আত্মীয়-স্বজন এলাকা ছাড়া।

বিজ্ঞাপন

রোববার বিকেলে শহীদ তানভীর সিদ্দিকীর বীর নিবাসের সামনে পরিবারের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে এসব অভিযোগ করেন তারা।

এরআগে শনিবার (১৮ অক্টোবর) দিন দুপুরে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধারসহ তানভীর সিদ্দিকী পরিবারের বিএনপি ও জামায়াতের ৭ সদস্যকে আটক দেখিয়েছে। যার ফলে এই অভিযান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোস্টগার্ড সমালোচিত হয়েছে।

সাংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, মহেশখালী উপজেলা যুবদল নেতা নাজমুল হোছাইন ছিদ্দিকী, বিএনপি নেত্রী জেসমিন আকতার মুন্নি।

এ মময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত বিশিষ্ট লবণ ব্যবসায়ী বদিউল আলম, সরওয়ারসহ অসংখ্য নারীপুরুষ।

সংবাদ সম্মেলনে মিজান ও নাজমুল কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে খউস্বর গোষ্ঠীর এক যুগের বেশি কারানির্যাতিত যুবদল নেতা জিয়াউর রহমান জিয়ার ঘরসহ ২ শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বছরের পর পর এসব পরিবারের সদস্যদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে হয়েছে। এ অবস্থায় জিয়ার দাদা জালাল মেম্বার ও মুহাম্মদ নূরের মৃত্যু হলে আওয়ামী লীগ দোসর তারেক চেয়ারম্যান তাদেরকে দাফন করতে দেয়নি। এলাকার বাইরে গিয়ে চকরিয়া ও কুতুবজুমে তাদের দাফন করতে হয়েছে। এরচেয়ে বেশি দুঃখের বিষয় জিয়ার পরিবারের জন্য কি হতে পারে? 

তারা আরও বলেন, ৩৬ জুলাই আন্দোলনে জিয়ার ছোটভাই তানভীর ছিদ্দিকী চট্টগ্রামে শহীদ হন। ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর জিয়াসহ খউস্বর গোষ্ঠীর লোকজন এলাকায় ফিরে আসেন। তবে আওয়ামী লীগ দোসর তারেক চেয়ারম্যান এলাকায় অবস্থান করে বারবার কোস্টগার্ড দিয়ে জিয়ার অসহায় পরিবার তথা খউস্বর গোষ্ঠীকে হয়রানি করে আসছেন। এমনকি অন্যান্য বারের মতো আবারো গত ১৮ অক্টোবর নাটকীয় অভিযান চালিয়েছে খউস্বর গোষ্ঠীর বাড়ি ঘরে।

সেখানে সোর্স হিসেবে আ.লীগের দোসর ও হত্যাসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামিদেরকে সঙ্গে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন প্রত্যেক্ষদর্শীরা। সম্প্রতি ব্যবসায়ী তোফাইল হত্যার অন্যতম পলাতক আসামি ডাকাত আবু বক্কর সোর্স হয়ে অভিযানে অংশ নিতে গিয়ে আটক হয়েছে মহেশখালী থানা পুলিশের হাতে।

‎সাংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত মেয়েরা কান্নাকাটি করে বলেন, সকলের সামনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন উসমান শরীফের লোকজন ২ বস্তা বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র এনে কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেন। তা খউস্বর গোষ্ঠীর ঘরবাড়ি থেকে উদ্ধার দেখানো হয়েছে। এছাড়া ঐ গোষ্ঠীর ৭ জন নিরহ লোককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার থানায় দায়ের করেছেন। এতে ওই পরিবারের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদসহ এলাকাবাসী শঙ্কিত।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত