ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ

কেনা জমিতে ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছেন না শরীয়তপুরের ডিসি

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ২০: ৪৯
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ২১: ০৪

নিজের নামে কেনা জমিতে ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন নার্গিস আক্তার। কিন্তু হঠাৎ করেই বাধা হয়ে দাঁড়াল প্রশাসন। কোনোরকম নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান, সরিয়ে নেয়া হলো নির্মাণ সামগ্রী। অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের নির্দেশেই ঘটেছে এ ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৮ জুলাই) শরীয়তপুর সার্কিট হাউজের পাশে বালুর মাঠে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার।

তিনি জানান, শহরের ৮০ নম্বর ধানুকা মৌজার ১২১৬ নম্বর খতিয়ানের ১০০৭ নম্বর দাগে ২৩ শতাংশ জমি ২০২১ সালে স্থানীয় ব্যবসায়ী নিরঞ্জন পালের কাছ থেকে ক্রয় করেন। খাজনাও নিয়মিত দিয়েছেন ২০২৫ সাল পর্যন্ত। সম্প্রতি সেই জমিতে বালু ফেলে ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু গত শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিজ এলাহী হঠাৎ অভিযান চালিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন এবং এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে বলেন।

ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার কেনা সম্পত্তিতে ডিসি আমাকে উঠতে দেয় না। আমি কাজ করতে আসলে ডিসি বাধা দেয়। আমি ঘর তৈরির জন্য ডিসির কাছে পারমিশন আনতে গেলে তিনি আমাকে পারমিশন দেন না, পৌরসভায় গেলে পৌরসভাও আমাকে ফরম দেয় না। সেদিন ইউএনও আর এসিল্যান্ড এসে আমার জমির খুঁটি সরিয়ে নেয়। তারা বলেন ডিসির নির্দেশে তারা এটা করছে। আমি গরিব বলে ডিসি আমার সাথে জুলুমবাজি করছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই। যদি তারা এই সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে নিয়ে যেতে চায়, তাহলে তারা নিক। নয়তো আমাকে আমার সম্পত্তিতে কাজ করতে দিতে হবে।

নার্গিসের স্বামী মকবুল হোসেন লিটন বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। ডিসি অফিসে বারবার ধরনা দিয়েছি, কোনো লাভ হয়নি। তারা আমাদের কথা শোনেই না। এমন অবিচার আর কতদিন?’

এদিকে উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন জানান, জায়গাটির শ্রেণি পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কাজ করে আসছিল একটি পক্ষ। তাদেরকে আদেশপত্র ও জমির কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আসতে বললে সেখানে দেখা যায়, কাগজে মালিকানা নিয়ে কিছু ত্রুটি রয়েছে। তখন পূর্বের জেলা প্রশাসক তাদের আদালত থেকে মালিকানা ঠিক করে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করে শ্রেণি পরিবর্তন না করেই স্থাপনা তৈরি করছিল। সেজন্য জায়গাটিতে স্থাপনা তৈরিতে আমরা বাধা দিয়েছি। এছাড়াও অন্য একজন ব্যক্তি এই জমি তাদের দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, ‘এই উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে জমিটি একাধিক ব্যক্তি নিজেদের মালিকানা দাবি করেছেন। বিস্তারিত যাচাই করে পরে জানানো হবে।’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত