বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় আ.লীগ নেতার হামলা, এলাকায় আতঙ্ক

জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৩২

মাদারীপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় চারটি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার পাশাপাশি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে সদর থানা পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের হোগল পাতিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

এলাকাটি দুর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় চরের বাসিন্দারা রয়েছে চরম আতঙ্কে। নদী এবং কাঁচা রাস্তা পার হয়ে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এতে করে এই এলাকা হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রাম। এই কারনে চরাঞ্চলের চাঁদাবাজির ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

স্থানীয়দের দাবি, এখানে পুলিশ যেতেও ভয় পায়। তারা বলেন, এলাকা থেকে প্রতি রাতে কমপেক্ষ ১০ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আবুল। বালু উত্তোলনের ফলে আড়িয়াল খাঁ নদে সম্প্রতি ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করেন চরের বাসিন্দারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের মানুষ চাঁদা না দেয়ায় ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের নেতৃত্বে শামিম আকন, মিরাজ আকনসহ ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য শুক্রবার রাতে দুর্গম চরের বাসিন্দা আক্তার বেপারী, গিয়াস বেপারী ও জলিল বেপারীর পরিবারের চারটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। অর্ধশত বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। এসময় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয় তারা। হাতবোমার বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ক্ষতিগ্রস্ত আক্তার বেপারী বলেন, ওরা অতর্কিত আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই, প্রশাসনের কাছে আমরা বিচার চাই।

চরের এক নারী জানিয়েছেন, দলবেঁধে ৭০-৮০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এসে প্রথমে পাশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপর বাড়ির পুরুষ সদস্য পালিয়ে প্রাণে বাঁচে। তারপর চালায় লুটপাট ও ভাঙচুর। এরা প্রতিদিন নদী থেকে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে।

তবে নানা অভিযোগের বিষয় বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বাড়ি গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনও বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, খবর পাওয়ার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত