আড়াই বছর ভারতে কারাভোগ শেষে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন এক মা ও তার শিশু সন্তান। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন।
ফেরত আসা মা ও ছেলের নাম রুমা বেগম (৩৯) এবং তার তিন বছর বয়সী শিশু সন্তান মিসাইল খলিল শেখ। তারা খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার গাজীপুর গ্রামের শহর আলী মোল্লার পরিবারভুক্ত।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাদের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে প্রয়োজনীয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে প্রায় তিন বছর আগে দালালের মাধ্যমে রুমা বেগম ও তার শিশু সন্তান ভারতের মুম্বাইয়ে যান। সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অবস্থানের দায়ে ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে। পরবর্তীতে ভারতের একটি আদালত মা-ছেলেকে আড়াই বছরের সাজা প্রদান করেন।
তিনি আরো জানান, সাজা ভোগ শেষে মুম্বাইয়ের একটি সেইফ হোম থেকে তাদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয় এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিজ হেফাজতে রাখে। পরে বাংলাদেশ ও ভারতের সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের সহযোগিতায় বিশেষ ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হলে শনিবার তারা দেশে ফেরার সুযোগ পান।
ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে মা ও ছেলেকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’ নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা তাদের গ্রহণ করে। সংস্থাটি রোববারই তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে ফেরত আসা রুমা বেগম জানান, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি দালালের প্রলোভনে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি ও তার শিশু সন্তান। পরে মুম্বাইয়ে অবস্থানকালে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাদের আটক করে। দীর্ঘ আড়াই বছর কারাভোগের পর ভারত সরকারের দেওয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে দেশে ফিরতে পেরে তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন।
রুমা বেগম আরো বলেন, ভারতে অবস্থানকালে জীবিকার তাগিদে তিনি হস্তশিল্পের কাজ করতেন। দেশে ফিরে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান তিনি।
এ ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় দালালচক্রের অপতৎপরতা বন্ধে আরো কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

