কংস নদে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছেন ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ । এতে এ দুটি উপজেলার মানুষের যোগাযোগ রক্ষায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সেনেরচর ও হালুয়াঘাট উপজেলার বাদে বাহিরশিমুল গ্রামের মধ্যবর্তী কংস নদের ওপর নড়বড়ে কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে দুই উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ। দুটি উপজেলার মধ্যবর্তী হওয়ায় কোনো উপজেলার পক্ষ থেকেই এখানে সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। দশ বছর আগে হালুয়াঘাটের বাদেবাহিরশিমুল ও ফুলপুরের সেনেরচর গ্রামের লোকজনের উদ্যোগে এখানে ১৬০ ফুট লম্বা একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে নড়বড়ে কাঠের সেতুই ২০ গ্রামের মানুষের নদ পারাপারের একমাত্র ভরসা।
এ সেতু দিয়ে হালুয়াঘাটের বাহিরশিমুল, আমতৈল, বড়বিলা, চকেরকান্দা, দলারচর, বিষমপুর, বাদে বাহিরশিমুল ও ফুলপুরের সেনেরচর, নিশুনিয়াকান্দা, বড়পুটিয়া, মারুয়াকান্দি, ঝিলকিপাড়া, মাইজপাড়া, পূর্ব দনারভিটা, সিংহেশ্বর, পলাশকান্দা, পুঁটিয়াকান্দি, চাতুলিয়াকান্দা, কোটরাকান্দা ও ডোবারপার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যানগাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোগাড়িসহ পারাপার করতে হয়। এছাড়া দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতশত শিক্ষার্থীর নদী পারাপারের একমাত্র অবলম্বন এ কাঠের সেতু। সেতুটি দুই উপজেলার মধ্যবর্তী হলেও ফুলপুর উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের জনগোষ্ঠীর জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করলেও ভারী যানবাহনগুলো পারাপার করা সম্ভব হয় না। ফলে কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ভিন্ন পথে বাজারজাত করতে গিয়ে বাড়তি খরচ গুনতে হয়।
কাঠের সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুপারের লোকজনের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি রয়েছে। সেতু রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সদস্য চাতুলিয়াকান্দা গ্রামের শহীদুল ইসলাম জানান, কাঠ দিয়ে তৈরি সেতুটি সচল রাখতে সারা বছরই খরচ করতে হয়। প্রায় প্রতিবছরই কাঠের পিলার পরিবর্তন করতে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। নিশুনিয়াকান্দা গ্রামের তফাজ্জল হোসেন বলেন, ব্রিজ না থাকায় এলাকার লোকজন ফুলপুর উপজেলা সদর ও হালুয়াঘাট সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে না। কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে মণপ্রতি অতিরিক্ত ৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়।
এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট উপজেলা প্রকোশলী আবু সালেহ মোহাম্মদ ওয়াহেদুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসী ইতোমধ্যে আবেদন করেছেন। এখানে একশ প্রকল্পের অধীনে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

