মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, বিএনপি নেতাকে শোকজ

উপজেলা প্রতিনিধি, বারহাট্টা (নেত্রকোনা)
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১০: ৩৩
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১০: ৩৯

নেত্রকোনার বারহাট্টায় মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও সড়কের খোয়া লুটসহ বিভিন্ন অভিযোগে নুরুল ইসলাম টিপন মিয়া (৫০) নামে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

টিপন মিয়া উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি একই ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মাঝপাড়া এলাকার মৃত হাজী আব্দুল করিমের (চান্দু মিয়া) ছেলে।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর টিপন মিয়া দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গ্রামের মাঝপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি হন। তারপর মসজিদের দান-অনুদানের টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেন। নিজের ছোট ভাইয়ের ১৪০ শতক জমি জোর করে দখল করে চাঁদা দাবি করে আসছেন।

সম্প্রতি গ্রামের নির্মাণাধীন পাকা সড়ক থেকে কয়েক গাড়ি ইটের খোয়া লুট করেন টিপন মিয়া। লিজকৃত নদীর থেকে আয়ের টাকা গ্রামের লোকজনকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে এলাকার মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীরা মিলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ করেন। পরে টিপন মিয়াকে শোকজ করা হয়।

টিপন মিয়ার ছোট ভাই মো. রুকন মিয়া বলেন, আমার ১৪০ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে রেখেছে টিপন। তার কারণে জমিতে চাষাবাদ করতে পারছি না। তাকে চাঁদা না দিলে জমি ছাড়বে না। তার কারণে এলাকার মানুষ অশান্তিতে রয়েছে। এদিকে মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো কাজ নেই তিনি করছেন না।

মল্লিকপুর মাঝপাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, টিপন নিজে নামাজ না পড়লেও গত বছরের ৫ আগস্টের পর দলীয় প্রভাবে মসজিদ কমিটির সভাপতি বনে যান। মসজিদের একটি বড় পুকুর রয়েছে, এটি তিনলাখ টাকায় লিজ দেয়া হতো। টিপন সভাপতি হয়ে নিজেই পুকুরটি লিজ নেয়। তবে টাকা পয়সা কোনোকিছুই দেয়নি। এছাড়া দান-অনুদানের টাকার কোনো হিসেব নেই।

সিংধা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম ইনচান বলেন, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এমন কোনো অপকর্ম নাই যা টিপন করেনি। চাঁদাবাজি, জোর করে জমি দখল, মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, নদীর টাকা আত্মসাতসহ সকল অপকর্ম তিনি করছেন। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা ব্যবস্থা নিবেন এই আশা রাখছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত টিপন মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল বলেন, টিপন মিয়ার বিরুদ্ধে মসজিদ ও নদীর টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, জোর করে জমি দখল ও মানুষকে হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি। তাই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, অপকর্ম করে কেউ পার পাবে না। দলের সুনাম নষ্ট হয় এমন কাজ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য অতিরিক্ত জমি লিখে না দেওয়ায় টিপন মিয়া ২০২১ সালে তার বাবা হাজী আব্দুল করিমকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে বাবা বাদী হয়ে টিপনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত