ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় প্রশিক্ষণ পরিচালনার কথা বলে বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর এনে দীর্ঘ এক বছরেও ফেরত না দেওয়ায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাল্টিমিডিয়া-ভিত্তিক ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সারাদেশের মতো ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর প্রদান করে।
গত বছরের ৪ জুলাই উপজেলা প্রাইমারি এডুকেশন ট্রেনিং সেন্টারে (ইউপিইটিসি) শিক্ষকদের একটি প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জহির আলম কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে শিক্ষা অফিসারের কথা মতো প্রধান শিক্ষক দুইজন শিক্ষকের মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা অফিসে মো. জহির আলমের নিকট যথাসময়ে তা পৌঁছে দেন।
পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ শেষে বিদ্যালয়ের পাঠদানের জন্য প্রজেক্টর ও ল্যাপটপের জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট গেলে তিনি ‘দিচ্ছি-দিচ্ছি’ বলে এক বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত তা ফেরত দেননি।
বুধবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা পারভিন বলেন, “এটিও স্যারের কথায় প্রশিক্ষণের জন্য প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ দিয়েছি। ট্রেনিং শেষে তা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও গত এক বছরেও তিনি তা ফেরত দেননি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি, কিন্তু তাতেও কোনো সুরাহা হয়নি।”
ছাত্রদের অভিভাবকরা জানান, প্রধান শিক্ষক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও অদ্যাবধি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ ফেরত দেওয়া হয়নি, যা খুবই দুঃখজনক। প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ না থাকায় শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযুক্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহির আলম জানান, উপজেলা প্রাইমারি এডুকেশন ট্রেনিং সেন্টারে (ইউপিইটিসি) ল্যাপটপ ও প্রজেক্টরের নষ্ট থাকায় ওই বিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণের জন্য ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর আনানো হয়েছিল। তার দাবি, “ট্রেনিং শেষে ইউপিইটিসি’র নৈশপ্রহরীর কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। পরে তিনি তা বিদ্যালয়ে বুঝিয়ে দেননি। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তবে এ বিষয়ে নৈশপ্রহরী আ. রহিমের সঙ্গে কথা বলতে সংশ্লিষ্ট অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। সেখানকার দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, তিনি প্রায় এক বছর আগেই এ অফিস থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহী দিলশাদ এলীন বলেন, “এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।"

