রাজশাহীতে হঠাৎ বৃষ্টিতে ১০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ০৮

নভেম্বরের শুরুতেই হঠাৎ টানা দুদিনের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর কৃষক সমাজ। অপ্রত্যাশিত এ বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে, নষ্ট হয়েছে শাকসবজি, ধান, পেঁয়াজসহ মৌসুমি ফসল। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চার হাজারের বেশি কৃষক।

জানা যায়, জেলার পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিয়ালবেড় গ্রামের কৃষক রাব্বানী মণ্ডল বলেন, বাজারে তোলার আগেই মুলা শেষ। পাঁচ বিঘা জমি পানিবন্দি। আষাঢ় মাসেও এমন বৃষ্টি হয় না। তবে কৃষি অফিসের লোকজন মাঠে এসেছেন, খবর নিয়েছেন। সরকার বীজ-সার দিচ্ছে, পানি শুকালে আবার লাগামু, হাল ছাড়মু না।

বিজ্ঞাপন

পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, ১২ কাঠা জমিতে শাকসবজি করেছিলাম, সব শেষ। এখন আবার নতুন করে লাগাতে সময় লাগবে। একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বি-৮৭ জাতের ধানও পানিতে তলিয়ে গেছে। তার ছেলে সোহানুর রহমান বলেন, ধান কাটার আগেই মাঠ ডুবে গেছে। অর্ধেক ধান নষ্ট হবে, খরচও উঠবে না।

দুর্গাপুর উপজেলার সিংগা গ্রামের কৃষক জাহিদ হোসেন জানান, দুই বিঘা জমির আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে। এক সপ্তাহ পরেই কাটার কথা ছিল। হঠাৎ এই বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেল।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, নিম্নচাপের কারণে নভেম্বরের শুরুতেই অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। মাত্র দুই দিনের বৃষ্টিতে জেলার প্রায় দুই হাজার ১৫০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকার মতো।

তিনি আরো জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শাকসবজিতে ২৬৭ লাখ টাকা, রোপা আমনে ১১৬ লাখ টাকা, পেঁয়াজে ১২৭ লাখ টাকা ও সরিষায় ১৮৫ লাখ টাকার মতো। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় প্রণোদনা বিতরণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এম এ মান্নান। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আমরা বিনামূল্যে সার ও বীজ দিচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন পানি শুকিয়েই দ্রুত নতুন ফসল লাগাতে পারেন।

রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলাজুড়ে এখনো কিছু জমিতে পানি জমে আছে। তবে কৃষকরা আশাবাদী প্রকৃতি একটু সহায় হলে, সরকারি সহযোগিতায় আবার ফসলের মাঠে প্রাণ ফিরে আসবে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত