২১ মামলার আসামি বিএনপি নেতা রাসেল কারাগারে

উপজেলা প্রতিনিধি, কাহারোল (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ১১

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ছিনতাইয়ের মামলায় বিএনপির স্থানীয় এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম রাসেল মন্ডল। তিনি উপজেলার ১ নম্বর শিবরামপুর ইউনিয়নের আরাজি মিলনপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। মঙ্গলবার স্থানীয় মিলন বাজারে বিএনপি অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ।

বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি আবদুল গফুর।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি জাকির হোসেন ধলুর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রাসেল বহুদিন ধরে শিবরামপুরে জাল ডলারের কারবার চালাচ্ছিলেন। গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা ডলার দেওয়ার কথা বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এছাড়া তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মাদক কারবার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা অপকর্ম করে আসছিলেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি একটি পিকআপ ভ্যান ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের সময় পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় মামলা হয়। এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে অন্য মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।

ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের বাড়ি নওগাঁর হেমায়েতপুরে। একটি পিকআপ ভ্যান বিক্রির কথা বলে তাকে বীরগঞ্জে ডেকে আনেন রাসেল। রফিকুল আসার পর ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তার পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এ বিএনপি নেতা। এ সময় তাকে জাল ডলার কারবারি হিসেবে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন রাসেল। পরে তিনি থানায় মামলা করেন।

থানা সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা রাসেল বিভিন্ন সময় পুলিশ বা আইনের লোক সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে তার রিবুদ্ধে চাঁদবাজি ও প্রতারণার ১৬টি, হত্যাচেষ্টার ৩, চুরির একটিসহ ২১টি মামলা হয়েছে।

হয়রানির শিকার হওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন, ‘জাল ডলার সিন্ডিকেটের আসল খেলোয়াড় ধরা পড়ায় আমরা স্বস্তি পেয়েছি। কালো চশমার আড়ালে যে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন এ বিএনপি নেতা। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আজ মুখোশ উন্মোচিত হলো।’

ডলার সিন্ডিকেট পরিচালনা ও চাঁদাবাজ-প্রতারকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি ধলুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাসেল উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি জাকির হোসেন ধলুর অনুসারী। তার বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

এখনো রাসেলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মঞ্জুরুল বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেলা বিএনপিকে জানিয়েছি। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জেলা বিএনপি সিদ্ধান্ত নিলে গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

বীরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল গফুর বলেন, বিএনপি নেতা রাসেলকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে থানায় প্রতারণা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের ২১টি মামলা আছে । তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ কাজে আরো যারা জড়িত, তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত