সাঘাটায় সরকারি জলমহাল এখনো আ’লীগের দখলে

মিজানুর রহমান রাঙ্গা, সাঘাটা (গাইবান্ধা)
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৩২

গাইবান্ধার সাঘাটায় দখল করা সরকারি ডিশে (জলমহাল) এখনও মাছ চাষ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এক বছর পূর্ণ হতে চললেও তাদের দখলে থাকা জলমহালে বহাল তবিয়তে মাছচাষ করায় প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, বন্যার পানি থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে উপজেলার বাঁশহাটা থেকে জুমরবাড়ি পর্যন্ত ওয়াপদা বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সে সময় উপজেলার মুন্সিরহাট, সাথালিয়াসহ আশপাশের গ্রামের বিভিন্ন পরিবারের নিকট জমি অধিগ্রহণ করা হয়। বাঁধ নির্মাণ করার পর সৃষ্ট ডিশে (জলাশয়) নিয়মানুযায়ী স্থানীয় জমিদাতা, ভূমিহীন, অসহায় পরিবার কিংবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী সুবিধাভোগী হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ক্ষমতার দাপটে কাউকে কোনো তোয়াক্কা না করে সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটের লোকজন জলাশয়গুলো দখলে নিয়ে মাছ চাষ করতে থাকে। ২০২২ সালে বাঁধ সংস্কারে ইটাকুড়ি ২(খ) এলাকার উক্ত ওয়াপদা ডিশে মাছ চাষ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পাউবোর এ নির্দেশকে অমান্য করে সাথালিয়া এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হেলাল, যুবলীগ সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রতন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মানিক মিয়া সহ তাদের লোকজন জোরপূর্বক আবারও মাছ চাষ শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত তাদের দাপট কিছুই কমেনি। দক্ষিণ সাথালিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদ মিয়া বলেন, বাঁধ নির্মাণের স্বার্থে আমাদের বাপ দাদারা জমি দিলেও আমরা বঞ্চিত রয়েছি। অথচ জোর করে তারা সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে। আ’লীগের পতন হলেও তাদের এইসব নেতাদের তাণ্ডবে সাধারণ মানুষ অসহায় বলে জানান, একই এলাকার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে ওই যুবলীগ সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রতনের কথা বলতে বার বার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। সাঘাটা উপজেলা মৎস্য বিভাগের ক্ষেত্র সহকারী কর্মকর্তা লিমন বাশার জানান, এসব জলমহাল এখন আর আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই কিছু করারও নেই। পাউবোর সাঘাটা প্রকৌশলী তুহিন মিয়া বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ওই এলাকায় মাছ চাষে কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। জোর করে মাছ চাষ করার ব্যাপারে তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

পাউবোর গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হকের সাথে কথা বলতে তিন দিন ধরে ফোনে কল দিলেও মিটিংয়ের অজুহাতে তিনি এড়িয়ে যান।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত