মেঘমুক্ত উত্তরবঙ্গের জেলা নীলফামারীজুড়ে তাপমাত্রা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পুকুর ও নদীর পানি গরম হয়ে উঠছে। তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে জনজীবন।
বাতাসে মনে হয় আগুনের ফুলকি। নীলফামারী ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলছে তীব্র দাবদাহ আর বইছে লু হাওয়া। আজ শনিবার সকালে এখানে তাপমাত্রা রয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আজ এখন পর্যন্ত জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ অঞ্চলে বিরূপ আবহাওয়া এবং ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চরম দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে শহর, বন্দর, নগর, গ্রামের মানুষ। দাবদাহের কারণে মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে। প্রখর রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে বিঁধছে মানুষের শরীরে।
সকালের স্বাভাবিক সময়কাল শেষ হতেই সূর্যের তাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে শহর ও গ্রামাঞ্চলে। শহরের বিভিন্ন শরবত ও পানীয়ের দোকানে পিপাসার্ত মানুষের ভিড় বাড়ছে। দেখা দিয়েছে জ্বর সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ নানান ধরনের রোগ।
হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি কষ্টের শিকার হচ্ছেন। গরমের তীব্রতায় পানিশূন্যতা ও বায়ুবাহিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর মাঝেই করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রচণ্ড রোদ ও গরমের মধ্যে ক্ষেতখামারে কাজ করতে পারছেন না কৃষক। রিকশা রেখে গাছতলায় অলস সময় কাটাতে দেখা যায় চালকদের।
এদিকে এ পরিস্থিতিতে চলমান বোরো ধান কাটাই মাড়াইয়ে কামলারা সেই ভোর রাতে মাঠে নেমে পড়ছেন। সকাল ১১টার পর কেউ আর মাঠে কাজ করছেন না।
কৃষি শ্রমিকরা জানান, ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যতদূর কাজ করা যায়। আমরা বোরো ধান কাটাই ও পাটক্ষেত নিড়ানির কাজ
করতে পারছি। এরপর আর মাঠে থাকা যায় না। সূর্যের তেজ আর বাতাসে আগুনের হলকা কাবু করে দিচ্ছে। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুকুরের পানি গরম হয়ে যাওয়ায় পুকুরের মাছগুলো ভেসে উঠছে। ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীর পানিতে উষ্ণ ভাব দেখা যাচ্ছে।

