দিনাজপুরে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

দিনাজপুরে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। তবে বড় বড় মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। গতবারের চেয়ে এবারে জামা কাপড়সহ সবকিছুর একটু দাম বেশি বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার ও মালদহপট্টিসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের প্রথমদিকে বেচাবিক্রি কিছুটা কম থাকলেও ১৫ রমজানে পর থেকে পর্যায়ক্রমে মার্কেটগুলোতে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। বিশেষ করে নারী ক্রেতাদের কেনা-কাটা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে ও রাতের সুবিধামত সময়ে নারী ক্রেতারা বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে পছন্দের সব কেনাকাটা শেষ করেছেন। মার্কেটগুলোতে দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি বিদেশি কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে মার্কেটগুলোর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে গত শুক্রবারও ক্রেতাদের ভিড়ে মূখরিত ছিল শহরের প্রতিটি মার্কেট।

শহরের স্টেশন রোডের ‘অপরাজিতা’ রেডিমেট গার্মেন্টস দোকানের স্বত্বাধিকারি মামুনুর রশিদ হিরা জানান, রমজানের প্রথম দিকে বিক্রি কম ছিল। গত এক সপ্তাহধরে বিক্রি বেড়েছে। তার দোকানে প্যান্ট, শার্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবি, টুপিসহ ছোট বড় সব বয়সের মানুষের পছন্দের পোশাক রয়েছে।

তিনি জানান, সকাল থেকে রাত ২টা আড়াইটা পর্যন্ত দোকানে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। বেচাবিক্রিও ভাল। আজ শনিবার থেকে চাঁদ রাত পর্যন্ত অর্থাৎ ঈদের আগের রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকবে। এই কদিন সারারাত দোকান খোলা থাকবে এবং সারারাতই বেচাকেনা হবে।

শহরের বাহাদুর বাজারের জমির ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিতারি ইমরান জানান, অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে বিক্রি একটু কম। তবে বেচাবিক্রি উঠানামা করে। কখনো কম আবার কখনো বেশি।

মালদহপট্টির মিলন বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারি মোফাসসিলুল মাজেদ মিলন জানান, ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইনের বোরকা বিক্রি হচ্ছে। তার দোকানে ৭০০ টাকা হতে ৩০০০ হাজার টাকা দামে বোরকা বিক্রি করা হয়। বেচাবিক্রি। চাঁদ রাত পর্যন্ত বেচাবিক্রি ভাল হবে বলে আশা করছেন তিনি।

ঈদের জন্য কেনাকাটা করতে আসা দিনাজপুর শহরের বড়বন্দর এলাকার বাসিন্দা মাসুদুর রহমান জানান, নিজের, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ করেছেন। তিনি জানান, গতবারের চেয়ে এবারে কাপড় চোপড়সহ সব জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি।

এদিকে সকাল থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে শহরে তিব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের লিলির মোড়, বাহাদুর বাজার জেনারেল হাসপাতাল মোড়, পৌরসভার মোড়, জেল রোড, মডার্ণ মোড়সহ শহরের প্রতিটি মোড়ে ও রাস্তায় সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে সামান্য রাস্তা অতিক্রম করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করতে হচ্ছে ক্রেতা ও পথচারিদের।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মুশফিকুর রহমান জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থাগ্রহণ করলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

দিনাজপুর পুলিশ সুপার মারফাত হুসাইন জানান, ঈদ উপলক্ষে জেলার সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ভালো। ক্রেতারা যাতে স্বাচ্ছন্দে ঈদের কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মার্কেটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের প্রতিটি মার্কেট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।