নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গীদের হেনস্তা

কট্টর ফ্যাসিস্ট সমর্থক মিজান সিলেটে ছাত্রলীগ-যুবলীগের অর্থের জোগানদাতা

খালেদ আহমদ, সিলেট
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ১১

আমেরিকায় প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের হেনস্তার চেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে ডিম নিক্ষেপ করে আটক মিজানুর রহমান চৌধুরী অনিক ওরফে মিজান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক ও সিলেট জেলা যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি সিলেটের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নাশকতায় অর্থের যোগানদাতা বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যে উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

মিজানের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ থানার রসুলপুর গ্রামে। তার বাবার নাম হাবিবুর রহমান চৌধুরী। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় সপরিবারে বসবাস করছেন মিজান। তার ভাই ব্যবসায়ী ওলিউর রহমান চৌধুরী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট এবং নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মতিবিনিময় সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন।

একটি গোয়েন্দা সংস্থা অনিকের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে ও তথ্য সংগ্রহ করছে। এতে জানা গেছে, তার পুরো পরিবারই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নায়িকা মৌসুমির সঙ্গেও অনিকের ছবি ও ঘনিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।

কট্টর আওয়ামী সমর্থক মিজান আওয়ামী লীগের অর্থের যোগানদাতা। ৫ আগস্টের পর জকিগঞ্জে আত্মগোপনে থাকা কর্মী-সমর্থকদের মিছিল করার জন্য তিনি অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছেন। তার ইন্ধনে ও অর্থায়নে জকিগঞ্জে মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী সমর্থকরা। সে তার বাড়িতে শুধু আওয়ামী সমর্থক লোকজনকে ডেকে এনে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে বলে এলাকার সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এলাকার বড় ভাই সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পলাতক নাসির উদ্দিন খান ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পলাতক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গেও তার ঘনিষ্টতা ছিল।

ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবরের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে ঈদের সময় বেশ বড় পরিমাণের বরাদ্ধ তার লোকজনকে পৌঁছে দিয়েছেন।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতারের ওপর ডিম নিক্ষেপের কথা ফেসবুকে নিজেই স্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান অনিক। এ ঘটনার একটি ভিডিও জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘খাইয়া দিছি টেরোরিস্ট আকতারকে।’

পুলিশ তাকে আটকের পরও ফেসবুকে আবার একটি স্ট্যাটাস দেন মিজানুর রহমান চৌধুরী। বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টার তিনি ফেসবুকে লিখেন- ‘আমি কারাগার থেকে বলছি, শেখ হাসিনার কর্মী মিজানুর রহমান চৌধুরী। জয় বাংলা।’

মিজানের বিরুদ্ধে বিএনপির কর্মীকে ছুরি দিয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সুলাইমান হক জানান, বিএনপি-সমর্থিত এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, মিজানুর রহমান তাকে ছুরি দিয়ে মারতে এসেছেন। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশ তাকে আটক করে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত