ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার চারটি ব্যাংক থেকে ৬ কোটি ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে চলতি অর্থবছরের প্রায় ছয় মাসে ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯৩ কোটি ডলার বা ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
জানা গেছে, ২০২২ সালে দেশের ডলার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। তখন প্রতি ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছায়। তৎকালীন সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিলেও ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এক পর্যায়ে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করতে হয়। এরপরও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত তিন অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এর মধ্যে ২০২১–২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, ২০২২–২৩ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। অথচ এ সময়ে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কেনা হয়েছে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের মতো।
তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার বন্ধে বর্তমান সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়। এতে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়—উভয়ই বেড়েছে। ফলে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ বাড়লেও সে অনুযায়ী চাহিদা না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ডলারের দাম কমে যাওয়ার কথা। তবে ডলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজ উদ্যোগে বাজার থেকে ডলার কিনছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি রয়েছে। ডলারের দাম যেন অস্বাভাবিকভাবে কমে না যায়, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কিনে বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখছে। ডলারের দর কমে গেলে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরও জানান, ডলার কেনার ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে।
বাড়ছে রিজার্ভ
ডলার কেনার কারণে রিজার্ভেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী এ রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।
গত বছরের একই সময়ে দেশের মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার, যা বিপিএম–৬ অনুযায়ী ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

