দশ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ৩৬% প্রবৃদ্ধি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ১২: ০৪
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাকের ক্রেতা কমে যাচ্ছে—এ কারণে দেশটিতে পোশাকের চাহিদা কমে আমদানিও কমছে। তবে এই চিত্রের মধ্যেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। মূলত কম মূল্যের কারণেই বাংলাদেশের রপ্তানি দেশটিতে বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে মোট পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ৮৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, সেখানে ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৭৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে। ১০ বছরে এই পরিমাণ হ্রাসের হার ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ।

২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমদানি প্রবণতা ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে ২০২০ সালে কোভিড মহামারির কারণে পোশাক আমদানিতে বড় ধস নামে। ২০১৯ সালের ৮৩ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২০ সালে তা ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৬৪ দশমিক ৬ বিলিয়নে। মহামারির পর যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেও ২০২৪ সালের মধ্যেও ২০১৫ সালের আমদানি পরিমাণে পৌঁছাতে পারেনি। তবে এর ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। এ সময়কালে রপ্তানিতে ৩৫ দশমিক ৯৪ ভাগ প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে।

২০১৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের রপ্তানিতে ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেখা গেলেও কোভিডের ধাক্কায় ২০২০ সালে তা ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হ্রাস পায়। তবে এর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর গতি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী—২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রপ্তানি বেড়েছে ৪০ দশমিক ৪৫ ভাগ, যেখানে একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক আমদানির প্রবৃদ্ধি মাত্র ২৩ দশমিক ৭২ ভাগ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা দেখা দিলে সাধারণত ভোক্তারা পোশাকের মতো অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে কৃপণতা দেখায়, যার প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও। যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইল খাতের ৯৫ ভাগ নির্ভর করে আমদানির ওপর। অথচ উচ্চ ট্যারিফ, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি ও পোশাকশিল্পের স্বল্প আয়ুষ্কাল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি ধারায় এই প্রবৃদ্ধি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মাঝেও দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

পোশাক খাতের উদ্যোক্তা ও একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মহিউদ্দিন রুবেল আমার দেশকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের নতুন নীতি নিয়ে কৌশলী ভূমিকা পালন করতে পারলে বাংলাদেশ এই বাজারে আরো ভালো করতে পারবে। তিনি বলেন, আলোচনার জন্য সময় খুব বেশি নেই। যতই সময় নষ্ট হবে, ততই ঝুঁকি বাড়বে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত