বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেছেন, আমেরিকার কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি কিছু শুল্ক ছাড় পাবো। আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট বলা আছে, কিছু দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বা নিরাপত্তা চুক্তি আলোচনা এখনো চলমান রয়েছে, যেগুলো সম্পাদিত হলে এসব দেশের শুল্ক আরো কমতে পারে। তাই বাংলাদেশকে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
শনিবার বাংলাদেশের রপ্তানির উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, আমাদের মার্কিন রপ্তানির প্রায় ৭৫% হচ্ছে তুলাভিত্তিক পোশাক, এবং শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে বলা আছে, যদি ন্যূনতম ২০% আমেরিকার কাঁচামাল (যেমন আমেরিকার তুলা) ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমেরিকার কাঁচামালের মূল্যের উপর এই অতিরিক্ত ২০% শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ আমেরিকার কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি কিছু শুল্ক ছাড় পাবো।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, কৃতজ্ঞতার সাথে বলতে চাই আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিশেষ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও তাদের টীম এই কঠিন আলোচনার সময় যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। তার প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশ একটি সমূহ বিপর্যয় এড়াতে পেরেছে।
মার্কিন শুল্কের বিষয়ে স্পষ্ট করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আগে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে এমএফএন শুল্ক দিতাম। এখন যে ২০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে, ফলে আমাদের মোট শুল্কের হার দাঁড়ালো ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা সুনির্দিষ্টভাবে বিভিন্ন পণ্যের জন্য বিভিন্ন হারে প্রযোজ্য হবে ।
এ শুল্কের কারণে ব্যবসা খরচ বাড়বে উল্লেখ করে মাহমুদ হাসান খান আরো বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক অবধারিতভাবে আমাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াবে, যেখানে শিল্পগুলো আগে থেকেই উর্ধ্বমুখী উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেটাতে প্রানান্তকরভাবে যুদ্ধ করছে। এক্ষেত্রে সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো যাতে করে ব্যবসা থেকে ছিটকে না পড়ে, তা সরকারকে নজরদারিতে রাখতে হবে।
শিল্প ও দেশের স্বার্থে সরকারের সকল নীতি সহায়তা চলমান থাকবে বলে সরকারের কাছে প্রত্যাশা রাখেন তিনি। তিনি বলেন, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে কাস্টমস সংক্রান্ত নীতিগুলো শিল্পবান্ধব হবে,চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, এবং শিল্প নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ পাবে।

