ব্যাংক কোম্পানি আইনের প্রস্তাবিত সংশোধন

রোহান রাজিব

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক কোম্পানি আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলেও গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠান ঋণ নিতে পারবে এমন বিধান বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবারতন্ত্রের প্রভাব কমাতে পরিচালক সংখ্যা কমানো এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বিধান বাতিলের প্রস্তাবও থাকছে।
আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্কারের অংশ হিসেবেই আইনের এসব প্রস্তাবিত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই এসব সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সেগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনটি নির্বাচনের আগে ব্যাংক কোম্পানি আইনে নানা শিথিলতা আনা হয়।
বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃত, নাকি যৌক্তিক কারণে খেলাপি হয়েছে এসব বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিত।
এছাড়া খেলাপিদের মধ্যে যারা ঋণ পরিশোধে অনিচ্ছুক বলে বিবেচিত হয়, তাদের পৃথক তালিকা করতে হয় ব্যাংকগুলোকে। এ তালিকায় তাদের ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। শুধু খেলাপিদের একটি তালিকা থাকবে এবং খারাপ গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তি পাবে। তবে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে এ ধারাটি বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত করা কঠিন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শক্তিশালী গোষ্ঠী আইন পরিবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছে। তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি নয়—এটা প্রমাণ করতে এ বিধান যুক্ত করে। ঠিকই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকায় ব্যাংকগুলোকে বড় কোনো গ্রুপ অন্তর্ভুক্ত করেনি। ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি করেছে। তাই এ ধারা বাদ দিয়ে ঋণখেলাপিদের ওপর নানা বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আমার দেশকে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ আইনে অনেক ধারা আগের সরকার ব্যাংকিং গোষ্ঠীর চাপে করেছে। এর মধ্যে ১২ বছর টানা পরিচালক থাকা, যেটা এখন ছয় বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিবারতন্ত্র অনেক কমিয়ে দিচ্ছি। স্বতন্ত্র পরিচালক ৫০ শতাংশ করারও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, খসড়াটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদের উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এ বিষয়ে অধ্যাদেশ আসতে পারে।
খসড়ায় ব্যাংকের পরিচালকের সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ জন করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকতে পারেন। তবে খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, বোর্ডের অর্ধেক সদস্য হবেন স্বতন্ত্র পরিচালক। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্য থেকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রস্তাব থাকছে। পরিচালক পদের মেয়াদ ১২ বছর থেকে ছয় বছরে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন পরিচালকের বিধান যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে তিনজন থাকার বিধান রয়েছে।
অন্যদিকে সংশোধিত আইনে পরিবারের সংজ্ঞার আওতা বাড়ছে। স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা, সন্তান, ভাই-বোন ছাড়াও শ্বশুরপক্ষ, ভাই বা বোনের স্ত্রী বা স্বামীপক্ষও পরিবার হিসেবে গণ্য হবে। একই পরিবার, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ১০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিধান থাকছে। তবে ব্যাংকের নীতি নির্ধারণে ৫ শতাংশের বেশি ভোটিং পাওয়ার থাকবে না।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এ পরিবর্তনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক করপোরেট সুশাসন জোরদার, বোর্ড নিয়োগ, শেয়ারহোল্ডিংয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারবে।
শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে তার সরকার ব্যাংক কোম্পানি আইন তিনবার সংশোধন করে। প্রতিটি সংশোধনী ব্যাংকিং খাতকে আরো দুর্বল করে তুলেছে। ২০০৩ সালের সংশোধনীতে পরিচালকদের মেয়াদের ছয় বছরের সীমা বাতিল করা হয়েছিল।
২০১৩ সালে আইএমএফের সুপারিশের পর এ সীমা পুনর্বহাল করা হয়েছিল, যার ফলে পরিচালকরা আরো ছয় বছর ধরে থাকতে পারবেন। ২০১৮ সালে মেয়াদ ৯ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয় এবং ২০২৩ সালে এটি আরো বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়। প্রতিটি সংশোধনী বাস্তবায়নের তারিখ থেকে মেয়াদ গণনাও পুনর্নির্ধারণ করেছিল, ফলে কিছু পরিচালক ৩০ বছর পর্যন্ত বোর্ডে থাকার সুযোগ গ্রহণ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক কোম্পানি আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলেও গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠান ঋণ নিতে পারবে এমন বিধান বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবারতন্ত্রের প্রভাব কমাতে পরিচালক সংখ্যা কমানো এবং ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বিধান বাতিলের প্রস্তাবও থাকছে।
আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্কারের অংশ হিসেবেই আইনের এসব প্রস্তাবিত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই এসব সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সেগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনটি নির্বাচনের আগে ব্যাংক কোম্পানি আইনে নানা শিথিলতা আনা হয়।
বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃত, নাকি যৌক্তিক কারণে খেলাপি হয়েছে এসব বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিত।
এছাড়া খেলাপিদের মধ্যে যারা ঋণ পরিশোধে অনিচ্ছুক বলে বিবেচিত হয়, তাদের পৃথক তালিকা করতে হয় ব্যাংকগুলোকে। এ তালিকায় তাদের ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। শুধু খেলাপিদের একটি তালিকা থাকবে এবং খারাপ গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তি পাবে। তবে সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে এ ধারাটি বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত করা কঠিন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শক্তিশালী গোষ্ঠী আইন পরিবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছে। তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি নয়—এটা প্রমাণ করতে এ বিধান যুক্ত করে। ঠিকই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির তালিকায় ব্যাংকগুলোকে বড় কোনো গ্রুপ অন্তর্ভুক্ত করেনি। ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি করেছে। তাই এ ধারা বাদ দিয়ে ঋণখেলাপিদের ওপর নানা বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আমার দেশকে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ আইনে অনেক ধারা আগের সরকার ব্যাংকিং গোষ্ঠীর চাপে করেছে। এর মধ্যে ১২ বছর টানা পরিচালক থাকা, যেটা এখন ছয় বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিবারতন্ত্র অনেক কমিয়ে দিচ্ছি। স্বতন্ত্র পরিচালক ৫০ শতাংশ করারও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, খসড়াটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদের উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এ বিষয়ে অধ্যাদেশ আসতে পারে।
খসড়ায় ব্যাংকের পরিচালকের সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ জন করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকতে পারেন। তবে খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, বোর্ডের অর্ধেক সদস্য হবেন স্বতন্ত্র পরিচালক। স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্য থেকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রস্তাব থাকছে। পরিচালক পদের মেয়াদ ১২ বছর থেকে ছয় বছরে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন পরিচালকের বিধান যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে তিনজন থাকার বিধান রয়েছে।
অন্যদিকে সংশোধিত আইনে পরিবারের সংজ্ঞার আওতা বাড়ছে। স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা, সন্তান, ভাই-বোন ছাড়াও শ্বশুরপক্ষ, ভাই বা বোনের স্ত্রী বা স্বামীপক্ষও পরিবার হিসেবে গণ্য হবে। একই পরিবার, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ১০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিধান থাকছে। তবে ব্যাংকের নীতি নির্ধারণে ৫ শতাংশের বেশি ভোটিং পাওয়ার থাকবে না।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এ পরিবর্তনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক করপোরেট সুশাসন জোরদার, বোর্ড নিয়োগ, শেয়ারহোল্ডিংয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারবে।
শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে তার সরকার ব্যাংক কোম্পানি আইন তিনবার সংশোধন করে। প্রতিটি সংশোধনী ব্যাংকিং খাতকে আরো দুর্বল করে তুলেছে। ২০০৩ সালের সংশোধনীতে পরিচালকদের মেয়াদের ছয় বছরের সীমা বাতিল করা হয়েছিল।
২০১৩ সালে আইএমএফের সুপারিশের পর এ সীমা পুনর্বহাল করা হয়েছিল, যার ফলে পরিচালকরা আরো ছয় বছর ধরে থাকতে পারবেন। ২০১৮ সালে মেয়াদ ৯ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয় এবং ২০২৩ সালে এটি আরো বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়। প্রতিটি সংশোধনী বাস্তবায়নের তারিখ থেকে মেয়াদ গণনাও পুনর্নির্ধারণ করেছিল, ফলে কিছু পরিচালক ৩০ বছর পর্যন্ত বোর্ডে থাকার সুযোগ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
২ ঘণ্টা আগে
ফের বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। বুধবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে মাত্র ৩৫৫ কোটি টাকা, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৩ জুন ডিএসইতে সর্বনিম্ন ২৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
২ ঘণ্টা আগে
দাবা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী মনন রেজা নীড়ের বিশ্বজয়ের যাত্রার অংশীদার হতে পেরে গর্বিত বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ছয়টি ব্যাংক থেকে প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৮০ পয়সা দরে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো থেকে মোট ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
৪ ঘণ্টা আগে