সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। তবে কমেছে ডিম, মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। চাল, মাছ ও গরু-খাশির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
কারওয়ান বাজারের আড়তের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছুদিন বাজারে আগামজাতের সবজি বিক্রি হয়েছে। এখন কৃষকের ক্ষেতের সবজি কিছুটা কমে বাজারে সরবরাহ কমায় সেজন্য দাম বেড়েছে। এছাড়া মুরগি ও ডিমের পাইকারি বাজারে নিম্নমুখী থাকায় খুচরায়ও কমে বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে ডজনপ্রতি মুরগির ডিম (লাল) ১২০ টাকায় এবং সাদা ডিম ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে মানভেদে ১৫৫ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি ২২০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে সরবরাহ বেড়ে বেশিরভাগ সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সবজির দাম ছিল চড়া। এমনকি সবজির সরবরাহ কমায় কোনো কোনো বাজারে সবজির দোকানের সংখ্যাও কিছুটা কমেছে।
এ প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা ইব্রাহীম আমার দেশকে বলেন, সরবরাহ এতটাই কমেছে যে, আড়তেই সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে কিনতে গিয়ে সবজি পাইনি। যা পেয়েছি সেগুলোর দামও বেশি।
শীতের আগামজাতের সবজি শিম, আলু, লাউ, মুলা, ফুল ও বাঁধাকপির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে শিমের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও মাঝের কয়েকদিন ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। দাম কিছুটা কমলেও বৃহস্পতিবার শিম বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ছোট আকারের একটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৩০ টাকার লাউ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। এসব সবজির দাম বাড়ার কারণে অন্যগুলোর দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা।
গত সপ্তাহে করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১০০ টাকা, বরবটি ও কাঁকরোলের কেজি ৬০-৭০ টাকা থেকে হয়েছে ৮০ টাকা। ঢ্যাঁড়স ও পটলের কেজি ৪০-৫০ টাকা থেকে হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচামরিচ কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। পুরোনো আলুর দাম কিছুটা বেড়ে ২৫ টাকা বিক্রি হলেও নতুন আলুর দাম আকাশছোঁয়া। প্রতিকেজি নতুন আলু ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে সবজির দাম চড়া থাকলেও মাছ-মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাশি ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে, কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেলেও ছিল পুরো উল্টো চিত্র। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আরো ৫ থেকে ১০ টাকা কমে মানভেদে ৯৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে বাজারে আগামজাতের পাতাযুক্ত নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। যার প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আদা-রসুন আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১৪০ এবং আমদানি করা রসুনের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। মানভেদে আদা ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া আমার দেশকে বলেন, আমদানির খবরে পাইকারি বাজারেই পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। ফলে খুচরা বাজারেও আমরা কিছুটা কমেই বিক্রি করছি। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে দাম আরো কমতে পারে।
এদিকে টিসিবির বাজারদরে দেশি ও আমদানি রসুন, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমলেও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

